টানা পতনে খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। ধারাবাহিক দরপতনে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ করা পুঁজি হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। দিন যত যাচ্ছে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের হতাশা তত বেড়েই চলেছে। মুনাফার আশায় এসে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। প্রাতিষ্ঠানিক, ব্যক্তি শ্রেণি এবং বিদেশী সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা হতাশ এখানে বিনিয়োগ করে। মার্জিন ঋণ নিয়ে সব কুল হারিয়ে অনেক বিনিয়োগকারী পথ বসেছেন।
এদিকে বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণের বিপরীতে আদায় না হওয়া লোকসান (নেগেটিভ ইক্যুইটি) সমন্বয়ের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ জানুয়ারি।
এমতবস্থায় শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী স্টক ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংক যারা বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কিনতে মার্জিন ঋণ প্রদান করেছে, তারা এখন পর্যন্ত ভালো ব্যবসা করতে পারেনি। সেই সঙ্গে শেয়ারবাজার দীর্ঘ সময় নেতিবাচক অবস্থায় থাকায় বিনিয়োগকারীদের নেগেটিভ ইক্যুইটি হিসাবের লোকসান পুনরুদ্ধার করতে পারেনি। আর বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে নেতিবাচক ইক্যুইটি হিসাব থেকে প্রতিনিয়ত বড় ধরনের বিক্রির চাপ বাড়ছে।
ফলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যদি নেগেটিভ ইকুইটি সমন্বয়ের মেয়াদ বাড়ানো না হয় তাহলে শেয়ারবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, নেগেটিভ ইকুইটি সমন্বয়ের মেয়াদ না বাড়লে বাজার সেল প্রেসার বাড়বে এবং বাজার দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক অবস্থার মধ্যে ধাবিত হবে। এই অবস্থায় নেগেটিভ ইকুইটি সমন্বয় না হলে বড় ধরনের পতনের মুখে পড়তে পারে শেয়ারবাজার।
এ বিষয়ে ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহামেদ রশিদ লালী বলেন, নেগেটিভ ইকুইটি সমন্বয়ের সময়সীমা অবশ্যই বাড়বে। বাড়াতেই হবে কারণ সময়সীমা যদি না বাড়ায় তবে বড় ধরনের পতন হবে সেটা পুঁজিবাজার হয়তো নিতে পারবে না। একারণেই সময়সীমা বাড়বেই।
নেগেটিভ ইকুইটি সমন্বয়ের সময়সীমা বাড়ছে কি না জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম শেয়ারবাজার নিউজ ডটকমকে বলেন, নেগেটিভ ইকুইটি সমন্বয়ের মেয়াদ বাড়ানো বিষয়ে এখনো কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে খুব শিগগিরই সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে একটি ইতিবাচক সিন্ধান্ত নেবে বিএসইসি।
এর আগে বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণের বিপরীতে আদায় না হওয়া লোকসান (নেগেটিভ ইক্যুইটি) প্রভিশনের মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসেসিয়েশন।
প্রস্তাবনায় ডিবিএ উল্লেখ করে, নেগেটিভ ইক্যুইটির প্রভিশন মেয়াদ যদি বৃদ্ধি করা না হয়, তাহলে বাজার সেল প্রেসার বাড়বে এবং বাজার দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক অবস্থার মধ্যে ধাবিত হবে। এছাড়া, নেগেটিভ ইক্যুইটির প্রভিশন মেয়াদ বৃদ্ধি করা না হলে স্টক ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বড় ধরণের লোকসানের মুখে পড়বে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, শেয়ারবাজার এখনও ভালো অগ্রগতি হয়নি। শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী স্টক ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংক যারা বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কিনতে মার্জিন ঋণ প্রদান করেছে, তারা ২০২৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভালো ব্যবসা করতে পারেনি। সেই সঙ্গে শেয়ারবাজার দীর্ঘ সময় নেতিবাচক অবস্থায় থাকায় বিনিয়োগকারীদের নেগেটিভ ইক্যুইটি হিসাবের লোকসান পুনরুদ্ধার করতে পারেনি। আর বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে নেতিবাচক ইক্যুইটি হিসাব থেকে প্রতিনিয়ত বড় ধরনের বিক্রির চাপ হচ্ছে। তাই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে বর্তমান শেয়ারবাজার পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের নেগেটিভ ইক্যুইটি হিসাব থেকে ব্যাপক পরিমাণ শেয়ার বিক্রির চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। তাই স্টক ব্রোকাররা গ্রাহকের মার্জিন ঋণ হিসাবে আদায় না হওয়া লোকসানের বিপরীতে প্রভিশন রাখার মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ জারি করা বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, স্টক ডিলার এবং মার্চেন্ট ব্যাংকারদের পোর্টফোলিওর মার্জিন ঋণ হিসাবে আদায় না হওয়া লোকসানের বিপরীতে প্রভিশন রাখার মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। https://www.sharebazarnews.com
sharemarket equity minus bangladesh bd