Home Featured সই জাল করে বেলহাসার নামে ওরিয়নের ঋণ নেওয়ার অভিযোগ

সই জাল করে বেলহাসার নামে ওরিয়নের ঋণ নেওয়ার অভিযোগ

by fstcap

ভাবা যায়, দুবাইয়ের আইকনিক টাওয়ার বুর্জ খলিফার নির্মাণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বেলহাসা গ্রুপের নাম উঠেছে বাংলাদেশে ঋণখেলাপির তালিকায় । অভিযোগ আছে, ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিমের জালিয়াতির কারণে এটা হয়েছে। ঢাকার মতিঝিলে ৪১ তলা বিশিষ্ট সিটি সেন্টার নির্মাণের সময় ওরিয়ন গ্রুপের সাথে লিড কোম্পানি ছিল বেলহাসা। সে সময় বেলহাসা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাজেদ আহমেদ বেলহাসার সই জাল করে ব্যাংক ঋণ নিয়ে পরে সেই ঋণ আর পরিশোধ করেনি ওরিয়ন।

রাজধানী বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলে বহুতল সিটি সেন্টার নির্মাণের জন্য ২০০৩ সালে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি হয় দুবাই-বাংলাদেশের যৌথ বিনিয়োগের প্রতিষ্ঠান বেলহাসা একম জেভি লিমিটেডের।

নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটিতে বেলহাসা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেয়ার ছিল ৬০ শতাংশ আর একম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ৪০ শতাংশ।আবার একম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মালিকানায় ওরিয়নের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিমের সঙ্গে ব্যবসায়ী মজিবুল হকের ৪০ শতাংশ শেয়ার আছে। তবে পরবর্তীতে বেলহাসা কিংবা মজিবুল হক কাউকে না জানিয়ে ওবায়দুল করিম একাই ওরিয়ন ল্যাবরেটরিজের নামে শেয়ার হস্তান্তর করে নেন জালিয়াতি করে।চুক্তি ও ব্যাংকিং কাগজপত্র ঘেটে দেখা যায়, বেলহাসা ও একম জেভি লিমিটেডের নামে সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল) থেকে ৪০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে সিটি সেন্টারের নির্মাণকাজ শুরু হয়।

পরে শেয়ারধারীদের অজ্ঞাতে ওবায়দুল করিম একাই সিটি সেন্টারের ২২টি ফ্লোর বিক্রি করেন প্রায় ৪৫০ কোটি টাকায়, যার বড় একটি অংশ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।ভবনটি নির্মাণের পর ২০১৭ সালে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এসআইবিএল থেকে দ্বিতীয় দফায় নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির নামে আবারও ৫০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়, যা আর পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত বেলহাসা একম জেভি’র খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকারও বেশি।

বেলহাসার শেয়ারের বিপরীতে ঋণ ও সিআইবিতে মালিকের নাম দেখে হতবাক দুবাইয়ের কোটিপতি ব্যবসায়ী খোদ মাজেদ আহমদ বেলহাসা। ব্যাংকঋণ নেওয়ার সময় বেলহাসার এমডির সই জাল করা হয় বলে তার ধারণা। এজন্য বেলহাসাও এখন বাংলাদেশ ঋণখেলাপি।

বেলহাসার আইনজীবী ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমদ ভূইয়া বলেন, ‘ওরিয়নের মালিক যিনি একমের শেয়ারহোল্ডিংয়ে আছেন, তিনি সই জাল করে জালিয়াতির মাধ্যমে ওরিয়নকে এখানে পার্ট করেছেন এবং তার পরিবারের যে সদস্যরা আছেন তাদেরও এখানে ঢুকিয়েছেন। এখানে বিড করার সময় এই মেম্বাররা ছিলেন না। ৫০ কোটি টাকার লোন ছিল, এটা এখন বেড়ে প্রায় ৮৬ কোটি টাকা হয়েছে। এই লোনের ব্যাপারে বেলহাসাকে জানানোও হয়নি, কোনো কনসেন্টও নেওয়া হয়নি, কোনো ডিরেক্টরস মিটিংও হয়নি এবং সেখানে কোনো এপ্রুভালও হয়নি।’

এদিকে অন্য শেয়ারধারীদের বঞ্চিত করে ওবায়দুল করিম একাই সিটি সেন্টারটি জবর দখল করে রেখেছেন। ভবনটির ভাড়াও আদায় করছে ওরিয়ন। পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভবনটির মালিকানা ও গেলো ১৪ বছরের ক্ষতিপূরণ আদায়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বেলহাসা।

ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমদ ভূইয়া বলেন, ‘সিটি সেন্টার থেকে যে ভাড়া আদায় হয়েছে সেটার যৌক্তিক যে অংশ সেটা বেলহাসা লাভ করবে এবং কোনোভাবে এই জালিয়াতিগুলো হয়েছে সেগুলোকে খুঁজে বের করে জালিয়াতির মামলা করবে, সিভিল কেস করবে এবং ক্রিমিনাল কেস করার জন্যও বেলহাসা প্রস্তুতি নিচ্ছে।’ 

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে বার বার যোগাযোগ করা হলেও কথা বলতে রাজি হননি ওরিয়ন। বরং প্রতিষ্ঠানটির দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করায় ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করছে তারা।

Orion group Bangladesh bd

You may also like