ঘন ঘন আইন বা নীতি বদল এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার সরাসরি বাজার হস্তক্ষেপ ঠিক নয়। এ ছাড়া অতালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের ব্যবধান কমিয়ে বড় ও স্বনামধন্য কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আসতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে শেয়ারবাজার ইস্যুতে সরকারের নীতি অনুকূল নয়। এমন ধারা বজায় রেখে সুষ্ঠু ও কার্যকর শেয়ারবাজার গড়া সম্ভব নয়। সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীদের নতুন গঠিত সংগঠন সিইও ফোরামের নেতারা এসব কথা বলেন।
বৈঠকে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু সভাপতিত্ব করেন। সিইও ফোরামের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান। দেশের অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে শেয়ারবাজার গড়ে তোলার পাশাপাশি এর ব্যাপ্তি বাড়াতে অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ডিএসই। প্রথম বৈঠকটি হয়েছে সিইও ফোরামের সঙ্গে। আজ মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সংগঠন বিএমবিএকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পরের দিন ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএর সঙ্গে বৈঠক হবে।
বৈঠক সূত্র জানায়, বিনিয়োগকারীদের জমা করা টাকার ওপর সুদ দেওয়ার যে নীতি বিএসইসি করেছে, তাতে ব্রোকারেজ হাউসগুলো গ্রাহকদের সব টাকা এখন চলতি হিসাবে রাখছে। আগে কিছু টাকা সঞ্চয়ী হিসাবে রাখায় তারা সুদ পেত। এটি মন্দা বাজারে ব্রোকারেজ হাউসের টিকে থাকায় কিছুটা সহায়তা করত। বিনিয়োগকারীরা কখনও জমার বিপরীতে সুদ চায়নি। তাহলে কেন বিএসইসি এমন নীতি চাপিয়ে দিল, প্রশ্ন তুলেছে সিইও ফোরাম।
ডিএসইর চেয়ারম্যান সমকালকে বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নের সঙ্গে শেয়ারবাজারের খুব একটা সম্পর্ক নেই। আমরা মনে করছি, এ ধারার পরিবর্তন দরকার। কী করে তা করা সম্ভব, কীভাবে শেয়ারবাজারকে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত করতে পারি, সে বিষয়ে অংশীজনের সঙ্গে মত বিনিময় করছি।’
সিইও ফোরাম কী বলেছে জানতে চাইলে হাফিজ মো. হাসান বাবু বলেন, শেয়ারবাজারের স্বার্থে কিছু নীতিগত পরিবর্তন দরকার। ভালো কোম্পানিকে কীভাবে শেয়ারবাবাজারমুখী করা যায়, সে বিষয়ে বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তারা। তিনি বলেন, ‘আমরা ব্রোকারদের বলেছি, আপনারা শুধু চেয়ারে বসে না থেকে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের সমস্যা জানেন। আমরা শুনছি, মুনাফার আশায় এসে অনেক বিনিয়োগকারী শূন্য হাতে ফিরে যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হলে আইন বা নীতির পরিবর্তন করেও কোনো লাভ হবে না। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারী সৃষ্টির জন্য কাজ করতে তাদের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
লেনদেন সংক্ষেপ
গতকাল ঢাকার শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৯৩ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৩৫টির দর বেড়েছে। এর মধ্যে বীমা কোম্পানি ৫০টি এবং মিউচুয়াল ফান্ড ১৪টি। দুই খাতের বাইরে বাকি সব খাতের অধিকাংশ শেয়ার দর হারিয়েছে। বেশির ভাগ শেয়ারের দর কমায় ডিএসইএক্স সূচক প্রায় ৩০ পয়েন্ট হারিয়ে ৫৬৬৬ পয়েন্টে নেমেছে। দিনব্যাপী কেনাবেচা হয়েছে ৯৬৮ কোটি টাকার শেয়ার, যা রোববারের তুলনায় প্রায় ১৮ কোটি টাকা কম।
source: https://samakal.com/economics/article/237091/শেয়ারবাজারে-ঘন-ঘন-নীতি-বদল-ও-হস্তক্ষেপ-ঠিক-নয়
sharebazar rule change