ফোর্বসের এশিয়ার সেরা ২০০ কোম্পানি তালিকায় বেক্সিমকো ফার্মা ও স্কয়ার ফার্মা

মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের এশিয়ার সেরা ২০০ কোম্পানির তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি। এশিয়া অঞ্চলের কোম্পানিগুলোর মধ্যে যাদের বার্ষিক বিক্রি ১ বিলিয়ন ডলারের নিচে তাদের মধ্য থেকে সেরা ২০০ কোম্পানি নিয়ে প্রতি বছর তালিকা প্রকাশ করে ফোর্বস। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে এ দুই কোম্পানি তালিকায় স্থান পেয়েছে।

ফোর্বসের তথ্যানুসারে, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ ৩১ কোটি ৯০ লাখ ডলার। কোম্পানিটির নিট আয় ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার এবং বাজারমূল্য ৬০ কোটি ডলার। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের বার্ষিক বিক্রি ৬৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। কোম্পানিটির নিট আয় ২১ কোটি ডলার এবং বাজারমূল্য ২০৪ কোটি ডলার।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের বিষয়ে ফোর্বস বলছে, কোম্পানিটি ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন ধরনের জেনেরিক ওষুধ, ওষুধ উপাদান ও নিউট্রিশন পণ্য উৎপাদন করে কোম্পানিটি। বেক্সিমকোর ওষুধের তালিকায় অ্যান্টিবায়োটিক, ডায়াবেটিস, শ্বাসযন্ত্র ও গ্যাসট্রোইনটেস্টিনালজনিত অসুস্থতার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ রয়েছে। কোম্পানিটি তিন বছরে ধরে ফোর্বসের এ তালিকায় রয়েছে।

সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের নিট আয় হয়েছে ৩ হাজার ৯২৭ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪৫২ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫০০ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ হিসাব বছরে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারপ্রতি সম্বন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ১০ টাকা ৩৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১১ টাকা ৪৮ পয়সা। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির পর্ষদ বিনিয়োগকারীদের জন্য ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

চলতি ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের আয় হয়েছে ১ হাজার ১১৫ ৯৩ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯৮৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৫৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ১৪১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৪৮ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩ টাকা ২৪ পয়সা। 

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার ১৪৬ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ১৪৬ টাকা ২০ পয়সা ও ১৫৬ টাকা।

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের বিষয়ে ফোর্বস বলছে, কোম্পানিটি ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অ্যান্টিবায়োটিক, প্রাণী স্বাস্থ্যপণ্য, হারবাল পণ্য ও কীটনাশক পণ্য উৎপাদন করে কোম্পানিটি। সম্প্রতি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস কেনিয়ায় জেনেরিক ওষুধ উৎপাদন শুরু করেছে। কোম্পানিটির বর্তমানে কর্মী সংখ্যা ১১ হাজার ১৯৯। চার বছর ধরে ফোর্বসের এ তালিকায় স্থান পাচ্ছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।

সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের মোট আয় হয়েছে ৭ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৬ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ হিসাব বছরে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ২১ টাকা ৪১ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২০ টাকা ৪৮ পয়সা। সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য রেকর্ড পরিমাণ ১০৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের পর্ষদ।

চলতি ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকেও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের মোট আয় হয়েছে ২ হাজার ১৬১ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৫৬৪ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫০০ কোটি টাকা। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ৭৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৬ টাকা ২০ পয়সা। 

ডিএসইতে গতকাল স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার ২০৯ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ২০৯ টাকা ৮০ ও ২১৪ টাকা ১০ পয়সা।