The potential of the country’s capital market has largely been unexplored in business financing because of policies that support easy, unregulated access to loans from the banking sector.
In consequence, the equity market has remained stunted for decades while the banking sector is on the verge of collapse for a rapid growth of non-performing loans. On the other hand, neighbouring countries have used the stock markets to the advantage of long-term financing.
A comparative picture would help understand how insignificant the size of the equity market is in Bangladesh. Last year, privately-run The City Bank alone disbursed loans worth Tk 41.3 billion whereas the aggregate amount of funds raised via the equity market in the same year was Tk 5.1 billion.
The market helped generate funds in the range of Tk 2 billion to Tk 14 billion between 2016 and 2023. The contribution of the country’s capital market in financing businesses was a mere 0.5 per cent, equivalent to Tk 54 billion, against 99.5 per cent or Tk 10.08 trillion lent by the banking sector in the last nine years.
Bangladesh is 12 per cent of India in terms of population and 13 per cent when both nations’ GDPs are taken into consideration. But in terms of IPOs between 2016 and 2023, Bangladesh is about 1 per cent of India.
Here, banks face a mismatch in debt management for providing long-term financing against short-term deposits.
In the financial ecosystem of countries with functional capital markets, the markets provide long-term financing instead of banks.
Good companies’ reluctance to list
Industry insiders think the problem lies with weak corporate practices in Bangladesh. Local, successful entrepreneurs do not want to share profits with shareholders and comply with listing regulations.
That is why several groups have issued shares of their weak subsidiaries to the market while better-performing units remain non-listed.
However, listing and its associated corporate regulations, if compliance is ensured, help strengthen businesses’ fundamentals. Non-listed companies may find their existence threatened after the death of the founders, but listed companies will keep running with the support of the market, regulators and shareholders.
Square Pharmaceuticals is one of the best examples of an enterprise thriving in the absence of the original entrepreneur, Samson H Chowdhury.
Another listed company, Olympic Industries has been performing well even though its owners do not live in the country.
A listed company’s corporate governance should be better than non-listed ones for mandatory disclosures of financial statements, annual general meetings and other measures of accountability.
Long-term financing through market on the agenda
Mandatory long-term financing through the capital market received renewed attention after the broad index of the Dhaka bourse shed around 800 points in four consecutive sessions at the end of October.
At a meeting with Finance Adviser Dr Salehuddin Ahmed on October 30, officials of the Bangladesh Securities and Exchange Commission (BSEC) suggested introducing a provision for companies to get long-term financing from the market after reaching a threshold of bank borrowings.
Mohammad Rezaul Karim, a BSEC executive director and spokesperson, said they were trying to include the matter on the agenda to be set for the upcoming coordination meeting of the financial sectors under the leadership of the central bank governor.
Shrinking IPO flow
Funds collected through IPOs and qualified investors’ offers (QIOs) amounted to Tk 5.6 billion in 2016. The amount rose to Tk 13.7 billion in 2020 and then declined to Tk 5.1 billion last year.
The Covid outbreak was blamed for the submission of an insignificant number of IPO proposals. Many local companies experienced losses due to countrywide shutdowns and rise in import costs following a hike in the prices of raw materials and exchange rates.
This year, the IPO pipeline has dried up further.
An amount worth Tk 1.1 billion only was raised through IPOs and QIOs as of September.
Market operators say the IPO valuation process under the book building method discourages companies from raising funds from the market.
The BSEC currently considers a company’s net asset value, prices of similar stocks, and the average EPS (earnings per share) in the preceding five years to decide the value of IPO shares.
Previously, companies’ offer prices were fixed based on the cut-off yield of the prices offered by eligible investors at the IPO bidding. Market operators have been demanding reintroduction of the market-driven formula to attract good companies.
Members of the task force recently formed by the securities regulator to recommend reforms said a move is underway to change the IPO valuation method.
BSEC
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও সুরক্ষায় তালিকাভুক্ত সকল প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে সু-শাসন প্রতিষ্ঠা করাসহ ১২ দফা প্রস্তাবনা পেশ করেছে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমআইএ)।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় আতীয় প্রেস ক্লাবে আবদুস সালাম হল তৃতীয় তলায় বিসিএমআইএ কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভা এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিসিএমআইেএ’র কো-অর্ডিনেটর এসএম ইকবাল হোসেন। এতে আলোচক ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সহ সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সাংবাদিক, গবেষক, অর্থ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ফজলুল বারী এবং অর্থনৈতিক সমন্বয়ক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন দিদারুল আলম ভূঁইয়া।
বিসিএমআইএ যে ১২ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে সেগুলো হচ্ছে- শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে সু-শাসন প্রতিষ্ঠা করা খুবই জরুরী। স্বচ্ছ আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা, শেয়ারবাজারে দেখা যায় শেয়ারের দাম বাড়ানো বা কমানোর জন্য কারসাজি করে আর্থিক প্রতিবেদন দেখায়, বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের তালিকাভূক্ত কোম্পানিগুলো তার মধ্যে অন্যতম। যে সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ইস্যু মূল্যের নিচে যে সকল কোম্পানির পরিচালকগণকে ইস্যু মূল্যে বাধ্যতামূলক শেয়ার ক্রয় করতে হবে। আর প্রত্যেক কোম্পানির মালিকানা শেয়ার ধারণ ৫১ শতাংশ থাকতে হবে। ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীকে লোন সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। বিশেষ করে বিনিয়োগকারীকে তাহার মূলধনের সমপরিমাণ লোন প্রদান করে ৫ বছর বিনা সুদে রাখতে হবে। এছাড়াও, প্রতিমাসে ২টি করে মিউচ্যুয়াল ফান্ড বিনিয়োগে নিয়ে আসতে হবে।
এছাড়াও আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা বাড়াতে হবে। মার্কেট মেকার লাইসেন্স প্রদানকরণ করা যেতে পারে। প্লেসমেন্ট শেয়ার পরিচালকদের ৫ বছর লক থাকতে হবে। কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর প্রথম ৫ বছর নূন্যতম ১০ শতাংশ হারে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে হবে। নগদ লভ্যাংশ বিওতে পাঠানো বাধ্যতামূলক করতে হবে। এতে প্রতিবছর মার্কেটে মূলধন বাড়তে পারে ২০০০/২৫০০ হাজার কোটি টাকা। বিগত ১৫ বছর যে সফল কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে সে সকল কোম্পানির পরিচালকদের ব্যক্তিগত সম্পদ কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্তির আগে ও পরের আর্থিক হিসাব প্রকাশ করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের সচেতনা বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা রাখার দাবি জানানো হয়।
শেয়ারবাজার থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের জিএমজি এয়ার লাইন্সের প্লেসমেন্ট শেয়ারবাজারে ছেড়ে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করেন বেক্সিমকো গ্রুপ। বিগত ১৪ বছর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদেরকে উত্তোলনকৃত অর্থ এখনো ফেরত দেওয়া হয়নি। উল্লেখিত বিষয়ে বর্তমান কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ক্ষতিগ্রন্থ বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে আহ্বান জানায় বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন। sharenews24.com
BCMI stock market investor
Mutual Trust Bank PLC’s (MTB) operating profit rose by 22.49% to Tk2.54 billion during July-September of this year, while profit before tax surged by 59.15% to Tk1.62 billion.
The bank recently announced its unaudited financial results for the third quarter of 2024.
The Q3 2024 financial performance of the bank reflects an impressive Tk46 billion growth, or a 17.54% increase in deposits since December of last year, totaling Tk309 billion. Loans and advances registered an 11.33% increase, or Tk30 billion growth, reaching Tk291 billion during the same period.
In the first nine months of 2024, the bank earned operating profit of Tk7.82 billion, a 33.38% YoY increase, while profit before tax stood at Tk3.53 billion, a rise of 9.35% over the corresponding period last year. Combined, these growth metrics steered earnings per share up by 6.7%, reaching Tk2.07 per share in the first nine months of 2024.
Additionally, MTB’s capital to risk-weighted assets ratio (CRAR) stands at a robust 14.08%.
“Amid an industry-wide struggle with customer confidence, MTB has demonstrated strong financial performance, driven by record breaking growth in customer deposits and solid bottom-line growths,” the bank says in a media release.
Syed Mahbubur Rahman, managing director and CEO of MTB, said, “We have delivered a strong performance in the third quarter, with profit before tax up 59.15% YoY, driven by record growth in customer deposits, efficient balance sheet management, and cost rationalisation.”
Beyond its exceptional financial growth, MTB’s achievements across its business operations have been widely recognised with over 20 national and international awards each year since 2022. Recent honours include a Top Sustainable Bank rating by Bangladesh Bank, Best Bank by the Indian Chamber of Commerce, Best Bank in Bangladesh by The Banker, Bangladesh’s Best Digital Bank by Euromoney, Bangladesh’s Best Bank for Diversity & Inclusion by Euromoney, Best CSR Bank Bangladesh by Business Tabloid Magazine, Most Innovative Digital Bank by International Finance, and Excellence in Consumer Financing by Global Business Magazine.
পুঁজিবাজারের প্রয়োজনীয় ৩ টি অংশ রেগুলেটরি, কারিগরি এবং মার্কেট ডেভেলপমেন্টের কাজ চলছে। অংশ গুলো মধ্যে রেগুলেটরি এবং কারিগরি অংশের কাজ শেষের দিকে, তৃতীয় অংশ মার্কেট ডেভেলপমেন্ট, সেটাও চলমান। বাংলাদেশে প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার কাজটি করছে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই) বলে জানিয়েছে সংস্থাটির চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান।
শনিবার (২ নভেম্বর) সিএসইর প্রধান কার্যালয়ে দুই দিনব্যাপী কমোডিটি ডেরিভেটিভস বিষয়ক সার্টিফিকেট প্রশিক্ষনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্থাটির চেয়ারম্যান এ সব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সিএসই এবং ডিএসইর ট্রেকের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার, পরিচালক মেজর (অব) এমদাদুল ইসলাম এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মালটি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ (এমসিএক্স) ইন্ডিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্টে এন্ড হেড অব রিসার্চ দেবজ্যোতি দে অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে এ প্রশিক্ষন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কে এম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সিএসই বাংলাদেশে প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার কাজটি করছে এবং এজন্য প্রয়োজনীয় তিনটি অংশের মধ্যে রেগুলেটরি এবং কারিগরি অংশের কাজ শেষের দিকে, তৃতীয় অংশ মার্কেট ডেভেলপমেন্ট- সেটাও চলমান। তারই ধারাবাহিকতায় সিএসই বেশ কিছু সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান এবং প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সেই প্রেক্ষাপটে আজকের এই সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানটি নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, প্রশিক্ষণের তিনটি উদ্দেশ্য থাকে- নিজের দক্ষতাকে আরও উন্নিত করা, জ্ঞানকে বর্ধিত করা এবং এটিচুউড পরিবর্তন করা। আজকের এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আপনারা যেমন ট্র্যাডিশনাল মার্কেট এবং কমোডিটি মার্কেটের পার্থক্য বুঝতে পারবেন, তেমনি নতুন মার্কেটে অংশগ্রহণের প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাবেন। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে এই প্রশিক্ষন কার্যক্রমগুলিকে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের যুক্ত করে আরও প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় করে তোলা।
তিনি আরও বলেন, আপনারা যারা আজকের এই প্রশিক্ষন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন, আমরা আশা করবো আপনারাই হবেন কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার পর অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রথম সারিতে। আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অত্যন্ত সুন্দরভাবে এক্সচেঞ্জ স্থাপনের কাজটি সম্পন্ন করতে পারবো। এর মাধ্যমে আমরা একটি গতিশীল পুঁজিবাজারও গঠন করতে পারবো।
অনুষ্ঠানে মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাংলাদেশ কোটি কোটি মানুষের দেশ এবং বিপুল সম্ভাবনাময়। অথচ কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার দিক থেকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল বা পাকিস্তান থেকে এখনো পিছিয়ে আছে। আজ কমোডিটি এক্সচেঞ্জ থাকলে পন্যের সঠিক এবং যৌক্তিক মূল্য পাওয়া যেত এবং মূল্যের এত উঠানামা হত না। এতে করে ভোক্তা থেকে উৎপাদনকারী সবাই উপকৃত হত। কাজেই আমাদের অর্থনীতির জন্য এই কমোডিটি এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠা এবং এর কার্যক্রম শুরু করা অতীব জরুরি।
তিনি বলেন, সিএসইর এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আরেক ধাপ এগিয়ে গেলাম। কারন, এই প্রশিক্ষণটিও প্রথম হিসেবে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেল। একই সাথে আপনারাও প্রথম প্রশিক্ষন গ্রহণকারী হিসেবে ইতিহাসের অংশীজন হলেন। আপনাদের অনুরোধ করবো যে, খুব গুরুত্ব আর মনোযোগ দিয়ে প্রশিক্ষণটি সম্পন্ন করবেন যেন পরবর্তীতে এই জ্ঞান আপনি কাজে লাগাতে পারেন।
এছাড়া সাইফুর রহমান বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে অনেক আগ থেকেই কমোডিটি ডেরিভেটিবস এক্সচেঞ্জ রয়েছে। তারপরও এক্সচেঞ্জগুলো এবং প্রতিষ্ঠিত ব্রোকাররা নিয়মিত প্রশিক্ষনের আয়োজন করেন। এই প্রশিক্ষনগুলোর দুটি দিক আছে- প্রথমত, নতুন নতুন পরিবর্তনগুলো জানানো এবং দ্বিতীয়ত নতুন জেনারেশনকে প্রস্তুত করা। ইতোমধ্যে সিএসই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ স্থাপনের জন্য প্রযুক্তিগত অবকাঠামো তৈরির কাজ প্রায় শেষ করেছে এবং সংশ্লিষ্ট রেগুলেশন অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে জমা দিয়েছে, যা খুব শিগগিরই অনুমোদন পাবে বলে আশা করছি।
সিএসইর এমডি বলেন, এখন গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো মার্কেট এবং মার্কেট সংশ্লিষ্ট অংশগ্রহণকারীদের উপযুক্তভাবে তৈরি করা। অর্থাৎ যারা এক্সচেঞ্জের সাথে যুক্ত হবেন তাদেরকে সঠিকভাবে প্রস্তুতের জন্য বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান এবং ট্রেনিংয়ের ধারাবাহিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা। গত দুই বছর ধরে সে লক্ষ্যে সিএসই টিম সচেতনতামূলক বিভিন্ন ধরনের নিয়মিত কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, আজকে শুরু হতে যাচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষন, কারন এই প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিটি অংশগ্রহণকারীদেরকে যে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে, যা তাকে পরবর্তীতে তার প্রতিষ্ঠানে এমনকি বাজার প্রস্তুতির প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে। অর্থাৎ মার্কেট প্রস্তুতির কাজটি এতই ব্যাপক যে, সিএসইর একার পক্ষে সম্ভব না। বিনিয়োগকারী পর্যন্ত পৌঁছাত গেলে আপানরাই হবেন মধ্যজন যারা প্রথম প্রশিক্ষণগ্রহণকারী হিসেবে পরবর্তী জনকে প্রশিক্ষণ দিবেন। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়াতে আপানাদের স্বাগতম এবং আমরা আশা করছি সবার সার্বিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় খুব অল্প সময়ে একটি সুগঠিত কমোডিটি এক্সচেঞ্জ স্থাপনের কাজটি আমরা দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করতে পারবো। অর্থসূচক
pujibazar
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভিন্ন ভিন্ন খাতের ১১ কোম্পানির প্রথম এবং তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। নিম্নে কোম্পানিগুলোর ইপিএস তুলে ধরা হলো:
কোম্পানিগুলো হচ্ছে-
রেকিট বেনকিজার: গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-সেপ্টেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৩ টাকা ১৩ পয়সা। গত বছর একই সময়ে আয় ছিল ৪৭ টাকা ৫৩ পয়সা।
অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৪-সেপ্টম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ১০৫ টাকা ৩৫ পয়সা আয় (ইপিএস) হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ১১০ টাকা ৮২ পয়সা আয় হয়েছিল।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৩০৩ টাকা ০৪ পয়সা।
ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স: গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-সেপ্টেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২০ পয়সা। গত বছর একই সময়ে আয় হয়েছিল ১৮ পয়সা।
অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৪-সেপ্টম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৬১ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ৬৯ পয়সা আয় হয়েছিল।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৬ টাকা ৭৩ পয়সা।
নিটল ইন্স্যুরেন্স: গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-সেপ্টেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৬ পয়সা। গত বছর একই সময়ে আয় ছিল ৩২ পয়সা।
অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৪-সেপ্টম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ৯৫ পয়সা আয় (ইপিএস) হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২২ পয়সা আয় হয়েছিল।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৩০ টাকা ৩২ পয়সা।
মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ: পরিচালনা পর্ষদ প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৮১ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ৭৬ পয়সা।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১২ টাকা ৮২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে এনএভিপিএস ছিল ১৪ টাকা ২৪ পয়সা।
বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস: পরিচালনা পর্ষদ প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (EPS) হয়েছে ১ টাকা ৫৬ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৬০ পয়সা আয় হয়েছিল।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২৭ টাকা ৯৩ পয়সা।
মেঘনা ইন্স্যুরেন্স: গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-সেপ্টেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২১ পয়সা। গত বছর একই সময়ে আয় ছিল ১১ পয়সা।
অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৪-সেপ্টম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ৯৩ পয়সা আয় (ইপিএস) হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ০৮ পয়সা আয় হয়েছিল।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৪ টাকা ০৫ পয়সা।
বিডি ফাইন্যান্স লিমিটেড: গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-সেপ্টেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ২৮ পয়সা। গত বছর একই সময়ে আয় ছিল ১৩ পয়সা।
অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৪-সেপ্টম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ৯৫ পয়সা লোকসান হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ৩৭ পয়সা আয় হয়েছিল।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১০ টাকা ৫৭ পয়সা।
ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স: গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-সেপ্টেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ০২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে আয় ছিল ৫৯ পয়সা।
অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৪-সেপ্টম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ২ টাকা ৭২ পয়সা আয় (ইপিএস) হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৯০ পয়সা আয় হয়েছিল।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৫১ টাকা ৯২ পয়সা।
সিটি ব্যাংক পিএলসি: গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-সেপ্টেম্বর’২৪) কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৪৯ পয়সা। গত বছর একই সময়ে সমন্বিত আয় ছিল ১ টাকা ০৫ পয়সা।
অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৪-সেপ্টম্বর’২৪) কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি ৩ টাকা ৩৫ পয়সা আয় (ইপিএস) হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ২ টাকা ৮১ পয়সা আয় হয়েছিল।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ২৯ টাকা ৯১ পয়সা।
সিকদার ইন্স্যুরেন্স: গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-সেপ্টেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩৮ পয়সা। গত বছর একই সময়ে আয় ছিল ৩৩ পয়সা।
অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৪-সেপ্টম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ৭৭ পয়সা আয় (ইপিএস) হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ৬৭ পয়সা আয় হয়েছিল।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৭ টাকা ৮৪ পয়সা।
মিডল্যান্ড ব্যাংক পিএলসি: গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-সেপ্টেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯ পয়সা। গত বছর একই সময়ে আয় ছিল ২২ পয়সা।
অন্যদিকে হিসাববছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৪-সেপ্টম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ৫৪ পয়সা আয় হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ৫৮ পয়সা আয় হয়েছিল।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৪ টাকা ৩৯ পয়সা।
EPS bd
শেয়ারবাজারের উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা দিতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এসব সহায়তার আওতাভুক্ত হবেন ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারী, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, উচ্চ সম্পদশালী বিনিয়োগকারী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানান। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে দুপুরে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখ, নির্বাহী পরিচালক মো, মাহবুবুল আলম ও মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, অর্থ উপদেষ্টা দেশে ফিরেছেন। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সমন্বিতভাবে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে নীতি সহায়তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। যার মধ্যে কিছু থাকবে স্বল্প মেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য, আর কিছু বিষয় মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
যেসব নীতি পদক্ষেপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তহবিল জোগানে সহায়তা, জরিমানার মাধ্যমে বিএসইসির আদায় করা অর্থ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারি-বেসরকারি ভালো ও লাভজনক কোম্পানিগুলোকে দ্রুত বাজারে আনতে আইপিও আইন সংস্কার ও কর প্রণোদনার ব্যবস্থা করা, শেয়ারবাজারে লেনদেন নিষ্পত্তির সময় কমিয়ে এক দিনে নামিয়ে আনা, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে পরিমাণ অনাদায়ি পুঞ্জীভূত ঋণাত্মক ঋণ (নেগেটিভ ইক্যুইটি) রয়েছে চূড়ান্তভাবে সেগুলোর নিষ্পত্তি করা, উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে মূলধনি মুনাফার করহার কমানো, শেয়ার পুনঃক্রয়ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ভবিষ্যতে আর কখনো ফ্লোর প্রাইস আরোপ না করা, সুশাসন ও আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করা।
যেসব বিষয় বিএসইসির বিবেচনায়* বাজারে তারল্য বাড়াতে আইসিবিসহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সহায়তা।* সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রণোদনা-সুবিধা।* বিনিয়োগ বাড়াতে কর-সুবিধা প্রদান ও মূলধনি মুনাফায় কর যৌক্তিকীকরণ।* ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে কর প্রণোদনা বাড়ানো।* আর্থিক জরিমানার অর্থ বিনিয়োগকারীর সুরক্ষায় ব্যবহার।* শেয়ার পুনঃক্রয়ের ক্ষেত্রে আইনি বিধান।* লেনদেন নিষ্পত্তির সময় কমানো।* ঋণাত্মক ঋণ হিসাব বা নেগেটিভ ইক্যুইটি সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু কারণে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এ অবস্থায় বাজারের উন্নয়নে তিনটি বিষয় মাথায় রেখে সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে। এগুলো হলো বিনিয়োগকারীর সুবিধা, বাজার মধ্যস্থতাকারীদের সমস্যার সমাধান ও বাজারের গভীরতা বৃদ্ধি। বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়াতে কর সুবিধা দেওয়া এবং ভালো কোম্পানিকে তালিকাভুক্তিতে আগ্রহী করতে কর প্রণোদনা বৃদ্ধি করা দরকার। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, সেটি কীভাবে ও কাদের দেওয়া হবে—এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে। আইসিবিকে তহবিল সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি দ্রুত সম্পন্ন করতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হবে। এ ছাড়া শেয়ার পুনঃক্রয়ের বিষয়ে কী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, তা নিয়েও সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে।
মতবিনিময়কালে শেয়ারবাজার বিষয়ে কর্মরত সাংবাদিকেরা নিজেদের কর্ম অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাজারের বিভিন্ন সমস্যা ও সুপারিশ তুলে ধরেন। কমিশনের পক্ষ থেকে এসব সুপারিশ লিপিবদ্ধ করা হয়।
সাংবাদিকদের বক্তব্যের পর কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাজারে প্রান্তিক ঋণ ও নেগেটিভ ইক্যুইটির সমস্যার সমাধানে কমিশন কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। কমিশন প্রতিদিনের বাজারের উত্থান-পতনে কোনো হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে বাজারে যাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসে, সে জন্য আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সচেষ্ট থাকবে। কমিশন আরও জানায়, ভালো কোম্পানি বাজারে আনতে এরই মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন তাঁরা। বহুজাতিক, সরকারি-বেসরকারি ভালো কোম্পানি বাজারে আনতে কমিশন কাজ করছে। পাশাপাশি তথ্য সরবরাহপ্রক্রিয়া সহজ করতে ডিজিটালাইজেশনের ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানানো হয়।
চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শেয়ারের দামে সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস আরোপ থাকায় অনেক বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়ে চলে গেছেন। বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের শেয়ারবাজার বিমুখ হয়ে গেছেন। আবার উচ্চ করহারের কারণে সম্পদশালী ব্যক্তিরা বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। অন্যদিকে উচ্চ সুদ পাওয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এখন ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগে বেশি আগ্রহী। তাই শেয়ারবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বৃদ্ধিতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে মিউচুয়াল ফান্ড খাতকে আরও বেশি সক্রিয় করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
মতবিনিময়কালে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিগত কমিশনগুলোর সময় ঘটা নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্তের পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ কারণে ২৭৬টি তদন্ত অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়ে গেছে। শেয়ারবাজারের তারল্য পরিস্থিতির উন্নতির জন্য লেনদেন নিষ্পত্তির সময় কমিয়ে এক দিনে নামিয়ে আনার বিষয়টি কমিশনের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে বলেও জানানো হয়।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘গত দুই মাসে আমরা বাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে অনেক আলোচনা করেছি। এসব আলোচনায় বাজারের উন্নয়নের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা উঠে এসেছে, সেগুলো সমাধানে কাজ করছে কমিশন। সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীরা ভবিষ্যতে ভালো কিছু পাবেন বলে আমরা তাঁদের আশ্বস্ত করছি। বর্তমানে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের কাজ চলছে। তারই অংশ হিসেবে পুঁজিবাজারেও স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে নানা সংস্কার বাস্তবায়ন হবে, যার সুফল বিনিয়োগকারীরা পাবেন। বর্তমান কমিশন সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিতের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ পুঁজিবাজার গঠনে বদ্ধ পরিকর।’
বাজার পরিস্থিতি
এদিকে টানা দরপতনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ হাজারের নিচে নেমে আসার পর আজ সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এদিন ডিএসইএক্স সূচকটি ১১৯ পয়েন্ট বা প্রায় আড়াই শতাংশ বেড়ে আবারও ৫ হাজারের মাইলফলক ছাড়িয়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৯৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩১২টিরই দাম বেড়েছে, কমেছে ৫৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৫টির দাম।
তবে সূচকের বড় উত্থান হলেও লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমেছে। এদিন ঢাকার বাজারে লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৪৭ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১০ কোটি টাকা কম। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, টানা পতনের পর গতকাল শেয়ারের দাম বাড়তে থাকায় বিক্রির চাপ কমে যায়। তাতে একদিকে লেনদেন কম হয়েছে, অন্যদিকে কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।
লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজ সূচকের বড় উত্থানে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বীকন ফার্মা, রবি আজিয়াটা, বেক্সিমকো ফার্মা, পূবালী ব্যাংক, গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মা ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। এই ১০ কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিতে সম্মিলিতভাবে ডিএসইএক্স সূচকটি ৬০ পয়েন্টের বেশি বেড়েছে।
sharebazar dse
নানামুখী অর্থনৈতিক সংকটের মুখে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ পাকিস্তান ও শ্রীলংকা। দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হতে হয়েছে তাদের।
নানামুখী অর্থনৈতিক সংকটের মুখে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ পাকিস্তান ও শ্রীলংকা। দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হতে হয়েছে তাদের। বিভিন্ন ধরনের সংস্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছে দেশ দুটি। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলংকার পুঁজিবাজারে। বর্তমানে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের পুঁজিবাজার। সর্বশেষ গত ২৫ অক্টোবর শেষে কেএসই-১০০ সূচক ৯০ হাজার ১২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। একই দিকে যাচ্ছে শ্রীলংকার পুঁজিবাজারও। একই সময় সিএসইঅল সূচক দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৫১৭ পয়েন্টে। দেশ দুটির তুলনায় অর্থনৈতিক সংকটের মাত্রা কম হলেও বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। টানা দরপতনের প্রভাবে গতকাল দেশের পুঁজিবাজার কভিডের পর সর্বনিম্ন অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে।
কভিডের সময় দেশের পুঁজিবাজার ৩ হাজার ৬০০ পয়েন্টে নেমে এসেছিল। এর পর থেকেই ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা যায় এবং ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ৭ হাজার ৩০০ পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়। তবে এর পর থেকে আবার পতনের বৃত্তে পড়ে যায় দেশের পুঁজিবাজার। কখনো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, কখনো অর্থনৈতিক সংকট, কখনো ডলার সংকটের কারণে অস্থিরতা দেখা গেছে পুঁজিবাজারে। জাতীয় নির্বাচনের পর এ বছরের শুরুতে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা ছিল। শুরুর দিকে কিছুদিন সে ধরনের প্রবণতা দেখাও গিয়েছিল। যদিও ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আবারো দরপতনের ধারায় ফিরে আসে পুঁজিবাজার। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়। যার প্রভাব দেখা যায় এর পরের বেশ কয়েকদিনের লেনদেনে। যদিও এর কিছুদিন পর থেকেই আবারো সেই পতনের বৃত্তেই আটকা পড়েছে পুঁজিবাজার। সর্বশেষ গতকাল দেশের পুঁজিবাজার প্রায় ৩ শতাংশ দরপতন হয়েছে এবং দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচক ৪ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গত আড়াই মাসে এক হাজারের বেশি পয়েন্ট হারিয়েছে পুঁজিবাজার।
দেশের পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক দরপতনের পেছনে তারল্য সংকট ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকটকে দায়ী করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে সুদের হার বেড়ে যাওয়ার কারণেও পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগ সরে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া অতীতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে সূচক ধরে রাখার যে প্রবণতা ছিল সেটি বর্তমানে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় অতীতে পুঁজিবাজারে ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকা অনিয়ম, দুর্নীতি ও কারসাজির অনিবার্য পরিণতি বর্তমানে আগের চেয়েও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য তারল্য সহায়তা হিসেবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ৩ হাজার কোটি টাকা প্রদানের বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে।
এ বিষয়ে আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘নীতি সুদহার বৃদ্ধি, জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ কমে যাওয়া, রফতানি ও রিজার্ভের মতো ইস্যুগুলো পুঁজিবাজারের নিম্নমুখিতার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। মার্জিন ঋণের কারণেও বাজারে একটি প্রভাব পড়েছে। সরকারের কাছে আইসিবি ৩ হাজার কোটি টাকার তহবিল চেয়েছে। পুঁজিবাজারের জন্য এটি খুব বেশি অর্থ নয়। তবে এ অর্থ হাতে আসার পর আইসিবি বিনিয়োগ করা শুরু করলে অন্য বিনিয়োগকারীরাও তখন এগিয়ে আসবেন।’
মূল্যস্ফীতি ও ডলার সংকট চরম পর্যায়ে ওঠার পর দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকায় জনঅসন্তোষ তৈরি হয়। যার প্রভাবে রাজাপাকসে সরকারকে বিদায় নিতে হয়েছে। এরপর দেশটি অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু করে, যার সুফল বর্তমানে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি দেশটিতে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। গত সেপ্টেম্বরে দেশটির মূল্যস্ফীতি ছিল ঋণাত্মক দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থনীতির পাশাপাশি শ্রীলংকার পুঁজিবাজারও ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। যদিও দেশটির ঘাড়ে এখনো বড় অংকের ঋণের বোঝা রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এর অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার সঠিক পথে এগোচ্ছে। শ্রীলংকার সিএসইঅল সূচক ১৩ হাজার পয়েন্টে উঠেছিল ২০২২ সালের জানুয়ারিতে। এরপর কিছুটা সংশোধন হলেও তা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় আছে। সর্বশেষ ২৫ অক্টোবর সিএসইঅল সূচকটি দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৫১৭ পয়েন্টে।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ঋণভার, সরকার পরিবর্তন হওয়ার মতো ঘটনার দিক দিয়ে মিল রয়েছে। শুধু একটি দিক দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মিল নেই সেটি হচ্ছে সুশাসন। পাকিস্তান ও শ্রীলংকার পুঁজিবাজারে সুশাসনের ঘাটতি ছিল না। আমাদের মতো সেখানে বিএসইসির চেয়ারম্যান পালিয়ে যান নাই। পৃথিবীর ইতিহাসে কখনো পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান পালিয়ে গেছেন এমন নজির নেই। এখন যে সুশাসন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে সেটি কি দৃশ্যমান? শেয়ারের দাম অবমূল্যায়িত তাও মানুষ কিনছে না। পুঁজিবাজার এক পর্যায়ে গিয়ে নিজেই ঘুরে দাঁড়াবে, সেটা ভিন্ন বিষয়। অতীতে পুঁজিবাজার সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা সমাধানে করণীয় কী হবে সেটি সবসময় নিয়ন্ত্রক সংস্থার লেন্স দিয়েই দেখা হয়েছে। বর্তমানেও এ প্রবণতার পরিবর্তন হয়নি বলেই মনে হচ্ছে। পুঁজিবাজারের সমস্যা সমাধানে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন।’
অর্থনৈতিকভাবে বেশ কঠিন সময় পার করছে পাকিস্তান। অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারণে এক পর্যায়ে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ঠেকেছিল দেশটি। অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি কেনারও অর্থ ছিল না দেশটির কাছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে শেষ পর্যন্ত আইএমএফের দ্বারস্থ হয় পাকিস্তান। এ অবস্থায় গত বছরের জুলাইয়ে দেশটিকে ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ দিতে সম্মত হয় আইএমএফ। এতে দেশটির অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। ঋণ অনুমোদনের খবরে গত বছর দেশটির পুঁজিবাজারের সূচক একদিনেই ২ হাজার ৪০০ পয়েন্টের বেশি বেড়েছিল। ব্লুমবার্গের পর্যবেক্ষণ অনুসারে, পাকিস্তানের পুঁজিবাজার সে সময় বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা বাজারের তালিকায় উঠে এসেছিল। দেশটির পুঁজিবাজারের এ ঊর্ধ্বমুখিতা এখনো দেখা যাচ্ছে। সর্বশেষ ২৫ অক্টোবর পাকিস্তানের বেঞ্চমার্ক সূচক কেএসই-১০০ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৯০ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়েছে।
ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পাকিস্তান ও শ্রীলংকার আর্থিক খাত অত্যন্ত পেশাদারত্বের সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর ফলে যে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে, সেটি এত তাড়াতাড়ি দূর করা সম্ভব নয়। তাছাড়া শ্রীলংকা যখন অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছে, তখনই তারা সেটিকে স্বীকার করে যথাসময়ে তা সমাধানে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। যার ফল তারা এখন পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানে অনেক দেরিতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় ফল আসছে না। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে অর্থনীতিতে সংস্কার কার্যক্রমের কিছু ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাবে বলে আশা করা যায়। সে সময় পর্যন্ত কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবেগতাড়িত হওয়ার প্রবণতা বেশি। এক্ষেত্রে বর্তমানে তাদের মধ্যে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, সেটি দূর করতে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে যোগাযোগের মাধ্যমে আশ্বস্ত করার মতো উদ্যোগ প্রয়োজন। এর পাশাপাশি মূলধনি মুনাফায় কর অব্যাহতির মতো কিছু নীতি পদক্ষেপ ত্বরিত উদ্যোগ হিসেবে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।’
প্রতিবেশী ভারতের পুঁজিবাজারে বর্তমানে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির প্রবণতার কারণে কিছুটা নিম্নমুখিতা দেখা যাচ্ছে। তবে সার্বিকভাবে দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক ধারায়ই রয়েছে দেশটির পুঁজিবাজার। এ বছরের আগস্টে বিএসই সেনসেক্স সূচক ইতিহাস সর্বোচ্চ ৮৪ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ ২৫ অক্টোবর সূচকটির অবস্থান ছিল ৭৯ হাজার ৪০২ পয়েন্টে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের পুঁজিবাজারে কারসাজি চক্রের দৌরাত্ম্যের কারণে জাঙ্ক শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদেরও আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কারসাজি চক্রকে অনুসরণ করে অনেকে এসব শেয়ারের প্রতি ঝুঁকেছেন। বর্তমানে পরিবর্তিত পরিস্থিতি কারসাজি চক্রের সদস্য বাজার থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে। এ অবস্থায় বাজারে কিছুটা তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে জাঙ্ক শেয়ার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকে মার্জিন ঋণ নিয়েছেন। এ অবস্থায় শেয়ারের দাম কমার কারণে মার্জিন ঋণ নেয়া বিনিয়োগকারীরা বেশি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। ক্ষেত্রবিশেষে ফোর্স সেলও হচ্ছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে তাদের কাছে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে শেয়ার বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
দেশে গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) শীর্ষ নেতৃত্ব ও প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর পর্ষদ সদস্য নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। যার প্রভাব সে সময় পুঁজিবাজারে পড়েছিল। কয়েক দফায় পরিবর্তনের পর বিএসইসির নতুন কমিশন ও ডিএসইর নতুন পর্ষদ গঠিত হওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরে আসবে। তারা মনে করেছিলেন পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার নতুন তরঙ্গ দেখা যাবে। যদিও ধারাবাহিক দরপতনের কারণে তাদের সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
জানতে চাইলে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে মাত্র আড়াই মাস হয়েছে। এখনো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে ওঠেনি। ফলে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস ফিরে আসতে কিছুটা সময় লাগবে। আমাদের রাজস্ব আয় কম হওয়ার কারণে সরকারকে ট্রেজারি বিল-বন্ডের মাধ্যমে অর্থ ধার করে চলতে হয়, যা সুদের হারকে বাড়িয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের পরিবর্তে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বন্ডের দিকে ঝুঁকছেন। এতে বাজারে তারল্য সরবরাহ কমে গেছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে বিএসইসির নতুন নেতৃত্বের পুঁজিবাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নেই। তাদের বুঝতে হবে এটি ব্যাংক নয়, পুঁজিবাজার। এখানে বাজারের খেলোয়াড়দের সঙ্গে সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে এগোতে হয়। কিন্তু মনে হচ্ছে কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর তাদের সঙ্গে একটি সংঘাতপূর্ণ অবস্থানে চলে গেছে। কারসাজি চক্র এ সুযোগটিকে কাজে লাগিয়েছে বলেই আমার ধারণা। কমিশন এক-দুই মাসের মধ্যেই যেসব কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে সেটি ছয় মাসে বাস্তবায়ন করলেও চলত। এর ফলে বিনিয়োগকারীরাও দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে গেছেন। এক্ষেত্রে ধীরে এগোনোই ভালো ছিল।’
stock market sharebazar Bangladesh Pakistan Shri-lanka
দেশের পুঁজিবাজারে নজিরবিহীন দরপতন চলছে। প্রতিদিনই শেয়ারের দর হারাচ্ছে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ কোম্পানি। কমছে মূল্যসূচক। গত এক মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৬৭৪ পয়েন্ট (১১.৯৫%) কমেছে। এরমধ্যে আজ রোববারই কমেছে ১৫৯ দশমিক ২০ পয়েন্ট (২.৯১%)। এ পতনকে পতনকে অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক মনে করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। রোববার (২৭ অক্টোবর) এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারের এমন পতন হওয়াকে অস্বাভাবিক এবং সন্দেহজনক বলে মনে করছে কমিশন। পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে পতনের বিষয়ে তদন্ত করা প্রয়োজন বলেও মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এজন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটিতে যারা রয়েছেন- বিএসইসির এডিশনাল ডিরেক্টর মোহাম্মদ সামসুর রহমান, বিএসইসির ডেপুটি ডিরেক্টর মুহাম্মদ ওরিসুল হাসান রিফাত, ডিএসইর সহকারী মহাব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান এবং সিডিবিএলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক কাজী মিনহাজ উদ্দিন।
কমিশন যেসব বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে-
১. ডিএসইএক্স সূচকের সাম্প্রতিক নিম্নমুখী প্রবণতার পিছনে কারণগুলো চিহ্নিত করাঅ
২. বাজারে গুজব ছড়ানোর সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা।
৩. অন্য কোন আনুষঙ্গিক বিষয় চিহ্নিত করাঅ
৪. বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোর জন্য সুপারিশ প্রদান করা।
বিএসইসি জানিয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তারা আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করবেন এবং কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। অর্থসূচক
pujibazar falling bsec
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ডজনের বেশি কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করার দায়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ২০২২ সালের বিভিন্ন সময়ে আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের জরিমানা করেছিল।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ না করায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি হিরু ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করেছে।
আবুল খায়ের হিরু শেয়ারবাজারে আলোচিত এক সরকারি কর্মকর্তা। শেয়ার কারসাজি করে যিনি রাতারাতি বড় বিনিয়োগকারী বনে যান। সমবায় ক্যাডারের এই কর্মকর্তার আছে বাজারকে ইচ্ছামতো প্রভাবিত করার ক্ষমতা। তিনি যখন কোনো শেয়ার কেনেন, অন্য বিনিয়োগকারীরাও তার পথ অনুসরণ করেন, কারণ তারা জানেন এই শেয়ারে বিনিয়োগ নিশ্চিত লাভজনক।
কমিশনের এনফোর্সমেন্ট রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ১১টি কোম্পানির শেয়ারমূল্যে প্রভাব খাটিয়ে সিকিউরিটিজ আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের জন্য হিরু গংদের ১৪ কোটি টাকারও বেশি জরিমানা করা হয়। কিন্তু এরপর প্রায় দুই বছর পেরিয়ে গেলেও গত ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত হিরু ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রায় ৫ কোটি টাকা পরিশোধ করেছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বকেয়া জরিমানা আদায়ের জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট বিভাগ চারটি সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করেছে।
নির্ধারিত ৩০ দিনের মধ্যে জরিমানা পরিশোধ না করায় শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আগের কমিশন জরিমানা পরিশোধের সময় এক বছর বাড়িয়েছিল। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের কয়েকদিন পরেই পদত্যাগ করেন শিবলী রুবাইয়াত।
১২ কিস্তিতে প্রায় ১০ কোটি টাকা পরিশোধের জন্য আরও এক বছর সময় চেয়ে কমিশনে আবেদন করেছিলেন হিরু। তবে ১৮ সেপ্টেম্বর কমিশন তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেয়।
বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিরু ও তার সহযোগীরা গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ফরচুন সুজ, ওয়ান ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, বিডি কম অনলাইন, আইপিডিসি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, জেনেক্স ইনফোসিস ও প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজিতে জড়িত ছিলেন। শেয়ারনিউজ২৪.কম
abul khayer hiru bsec
ক্যাপিটাল গেইন বা মূলধনী আয়ের উপর অর্জিত আয়কে সম্পূর্ণরূপে কর অব্যাহতি দেয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) প্রস্তাব দিয়েছে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম। এ প্রস্তাবকে ইতিবাচক ভাবেই নিয়েছে এনবিআর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সাথে তার অফিসে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় লিখিতভাবে এ প্রস্তাব দেন ডিএসইর চেয়ারম্যান।
এ সময় ডিএসইর পক্ষে পরিচালক অধ্যাপক মেজর জেনারেল (অবঃ) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, মো. শাকিল রিজভী, রিচার্ড ডি রোজারিও, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাত্বিক আহমেদ শাহ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষে সদস্য (ট্যাক্স পলিসি) এ কে এম বদরুল আলম এবং সেন্টার ইন্টেলিজেন্স সেলের ডিরেক্টর জেনারেল আহসান হাবীব উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসই’র প্রতিনিধিগণ পুঁজিবাজারে ইতিবাচক ধারা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নীতি সহায়তার অনুরোধ জানান। প্রতিনিধি দল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিকট একটি লিখিত প্রস্তাবনাও উপস্থাপন করেন।
লিখিত প্রস্তাবে ডিএসই’র চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, পুঁজিবাজার মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রধানতম চালিকাশক্তি। কিন্তু বিভিন্ন অনিয়ম এবং নীতি অসংগতির কারণে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এযাবৎকালে অর্থনীতিতে কাঙ্খিত ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে পুঁজিবাজারের কাঠামোগত সংস্কারে বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জসহ সকল বাজার মধ্যস্থাকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ একযোগে কাজ করছে। আশা করা যায় সকল সংস্কার কার্যক্রমের সফল সম্পাদন এবং পরিপূরক নীতিসহায়তার মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজার শীঘ্রই একটি দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়াতে সক্ষম হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখা শুরু করবে।
প্রস্তাবনায় আরও উল্লেখ করা হয়, আয়কর আইন ২০২৩-এর মাধ্যমে ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানি বা তহবিলের শেয়ার বা ইউনিট হস্তান্তর হতে অর্জিত ৫০ লক্ষ টাকার অধিক মূলধনী আয়ের উপর কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করা হয়। যার ফলে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ হারে কর প্রদানকারী করদাতাদের জন্য সারচার্জসহ এরূপ অর্জিত আয়ের উপর কার্যকরী করের হার ক্ষেত্র বিশেষে ৪০ দশমিক ৫ শতাংশে উপনীত হয়। এটি ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজার বিমুখ করেছে এবং পুঁজিবাজারের উপর সামগ্রিকভাবে ভীষণ নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ফলশ্রুতিতে দেশের প্রধান ষ্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইতে দৈনিক লেনদেন ফেব্রুয়ারী ২০২৪-এ সর্বোচ্চ ১৮০০ কোটি টাকা থেকে ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে অক্টোবর ২০২৪-এ দৈনিক ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে। বাজারের সূচকও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং সূচকের অব্যাহত পতন বিনিয়োগকারীদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। বাজারের এই লেনদেন এবং সূচকের পতনের ফলে সরকারের মূলধনী আয়ের উপর কর (ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স) এবং লেনদেনের উপর আরোপিত কর (টার্নওভার ট্যাক্স) উভয়ই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। এখানে উল্লেখ্য যে পুঁজিবাজারের লেনদেন থেকে ০.০৫% হারে উৎসে কর কর্তনের বিধান রয়েছে।
প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়, পুঁজিবাজারকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের জন্য উক্ত মূলধনী আয়ের উপর অর্জিত আয়কে সম্পূর্ণরূপে কর অব্যাহতি দেয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমরা আপনার নিকট বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি করা হলে শুধুমাত্র পুঁজিবাজারই উপকৃত হবে না, তার সাথে সাথে লেনদেন-এর উর্দ্ধগতি অর্জনের ফলশ্রুতিতে টার্নওভার ট্যাক্স এবং ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্সের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ঘটবে।
এতে বলা হয়, ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের জন্য তালিকাভূক্ত কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ আয়ের উপর উৎসে কর্তিত কর-কে চূড়ান্ত কর হিসেবে পরিগণনা, ব্রোকারেজ হাউসগুলোর লেনদেন থেকে ০.০৫ শতাংশ উৎসে কর-কে হ্রাসকরন এবং এ খাত থেকে নিরূপিত ক্ষতি অন্য খাতের আয়ের সাথে সমন্বয় কিংবা নিরূপিত ক্ষতির জের পরবর্তী ছয় বছর পর্যন্ত টানার অনুমতিসহ বেশ কিছু প্রস্তাবনা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিবেচনার জন্য অতীতে ডিএসই’র পক্ষ থেকে প্রেরণ করা হয়েছে। এসকল প্রস্তাবনার বিষয়গুলোও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সুবিবেচনা লাভ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
প্রতিনিধিদল পুঁজিবাজারের গতিশীলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সকল বাজার মধ্যস্থতাকারি ও বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে উল্লেখিত বিষয়গুলো সু-বিবেচনা ও সমাধানের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতি অনুরোধ জানান।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, প্রস্তাবিত বিষয়গুলো নিয়ে তিনি অবহিত আছেন এবং সামগ্রিক অর্থনীতি, পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রস্তাবনাগুলোর ব্যাপারে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
তিনি প্রতিনিধি দলকে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের পেশাদারিত্বের সাথে কার্যক্রম প্ররিচালনা, ডিভিডেন্ড আয়ের উপর উৎসে কর কর্তনের সার্টিফিকেট প্রদানসহ কিছু বিষয়ে ডিএসই’র নেতৃত্বশীল ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন। অর্থসংবাদ ডট কম
gain tax NBR