July 10, 2025 8:16 pm
Home Industry News চীনের পোশাক রপ্তানি ২২ বছরের সর্বনিম্ন, বাংলাদেশের জন্য খুলছে নতুন দুয়ার

চীনের পোশাক রপ্তানি ২২ বছরের সর্বনিম্ন, বাংলাদেশের জন্য খুলছে নতুন দুয়ার

by fstcap

চীনের পোশাক রপ্তানি বিপর্যয়ের মুখে। চলতি বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পোশাক আমদানি নেমে এসেছে গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশন (USITC) প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে চীন থেকে আমদানি করা পোশাকের পরিমাণ ছিল মাত্র ৫৫৬ মিলিয়ন ডলার, যেখানে এক মাস আগেই তা ছিল ৭৯৬ মিলিয়ন ডলার। খবর রয়টার্সের।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের এই পতনের পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া শুল্ক নীতি। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৫ সালের এপ্রিলে চীনা পোশাকের ওপর সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেন। এর ফলে চীন থেকে মুখ ফিরিয়ে ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, ভারত ও মেক্সিকোর মতো দেশে সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পোশাক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো।

 
 

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ডেলাওয়্যারের ফ্যাশন অ্যান্ড অ্যাপারেল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক শেং লু বলেন, ‘চীনা আমদানির এই পতন নিছক অর্থনৈতিক বাস্তবতা নয়, বরং এটি রাজনৈতিক প্রভাবেও পরিচালিত।’

এ বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের জানুয়ারির তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। অনেক প্রতিষ্ঠান তখন ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির আশঙ্কায় আগাম আমদানি করেছিল।

 

চীনের বিপরীতে লাভবান হচ্ছে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো। আন্তর্জাতিক অডিট প্রতিষ্ঠান কিউআইএমএ (QIMA) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনে মার্কিন সোর্সিং কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ, যেখানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বেড়েছে ২৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, ভারত ও মেক্সিকো—এই দেশগুলো এখন মার্কিন পোশাক আমদানিকারকদের কাছে নতুন ভরসাস্থলে পরিণত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, মেক্সিকো মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ২৫৯ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তবে এটি তেমন কোনো আশাব্যঞ্জক পরিবর্তন আনতে পারছে না। অধ্যাপক লু মনে করেন, ‘চীনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সাপ্লাই চেইন থেকে ধীরে ধীরে সরে যাওয়ার প্রক্রিয়া এখন আরও ত্বরান্বিত হচ্ছে।’

কিউআইএমএ সতর্ক করেছে, সামনের মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ চেইনে নতুন চাপ তৈরি হতে পারে। কারণ, যেসব দেশে সাময়িকভাবে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছিল, সেই সুবিধাগুলো শিগগিরই শেষ হচ্ছে। এরই মধ্যে শুরু হতে চলেছে মার্কিন ছুটির মৌসুমের বড় কেনাকাটার প্রস্তুতি, যা সাপ্লাই চেইনের ওপর নতুন চাপ তৈরি করবে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য এটি হতে পারে বড় একটি সুযোগ। মার্কিন বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে এখনই।

https://www.ittefaq.com.bd/740763/চীনের-পোশাক-রপ্তানি-২২-বছরের-সর্বনিম্ন-বাংলাদেশের

You may also like