পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ড. এটিএম তারিকুজ্জামান। আগামী সোমবার (২০ মে) তিনি বিএসইসিতে যোগদান করবেন।
বর্তমানে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। আর এই চ্যালেঞ্জ নিয়েই পুঁজিবাজারে সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে ‘স্মার্ট পুঁজিবাজার’ গড়ে তুলতে চান ড. এটিএম তারিকুজ্জামান। রোববার (১৯ মে) রাইজিংবিডির সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সদ্য বিদায়ী বিএসইসির একজন সাবেক নির্বাহী পরিচালক সংস্থাটির কমিশনার পদে দায়িত্ব পালন করবেন- এ অনুভূতিটা কেমন জানতে চাইলে ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, ‘আসলে এ অনুভুতিটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। তবে আমার কাছে খুবই আনন্দের মনে হচ্ছে। ২৫ বছরের বেশি সময় বিএসইসিতে কাজ করেছি। আবারও নতুন আঙ্গিকে বিএসইসিতে কাজ করার সুযোগ হচ্ছে। এটা আসলেই আনন্দের পাশাপাশি গৌরবেরও বটে। আমাকে এ পদে যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
পুঁজিবাজারের এই চ্যালেঞ্জিং মুহূর্তে কমিশনারের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। এই চ্যালেঞ্জ উতরিয়ে ওঠা কি সম্ভব?
এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে বর্তমান যে অবস্থা বিরাজ করছে তা থেকে উতরে ওঠা বা পরিবর্তন আনা অবশ্যই সম্ভব। এটা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সুশাসনের কোনো বিকল্প নাই। সবার সহযোগিতা পেলে সুশাসন নিশ্চিত করে ‘স্মার্ট পুঁজিবাজার’ গড়ে তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। এতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগকৃত পুঁজির নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। পুঁজিবাজারে সর্বপরি সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হলেই উপকৃত বা লাভবান হবেন বিনিয়োগকারীরা।’
বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে দেশের পুঁজিবাজার কি ভূমিকা রাখতে পারে? প্রশ্নের জবাবে নতুন কমিশনার বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। আর সেজন্য প্রয়োজন স্মার্ট পুঁজিবাজার। আমরা স্মার্ট পুঁজিবাজার রূপান্তর করব, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
এটিএম তারিকুজ্জামান আরো বলেন, ‘২৫ বছরের বেশি সময় ধরে আমি কমিশনে পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করেছি। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আমি দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ভাল কিছু করতে চাই। পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, সুশাসন নিশ্চিতকরণ ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আমার যে চিন্তাভাবনা রয়েছে, তা কমিশনের কাছে তুলে ধরব। সে বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান ও অন্যান্য কমিশনারদের সম্মতি পেলে, সম্মিলতভাবে পুঁজিবাজারকে একটি ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেত পারব বলে বিশ্বাস করি। বিএসইসির কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে আমি পুঁজিবাজারের উন্নয়নে আরো অধিক পরিসরে কাজ করতে পারব বলে বিশ্বাস করি। আশা করি পুঁজিবাজারের জন্য ভালো কিছু করতে পারব। আর এ কাজে আমাকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
প্রসঙ্গত, ড. এটিএম তারিকুজ্জামানকে গত বছরের ৮ আগস্ট ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ দেয় বিএসইসি) এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি ডিএসইতে কাজে যোগদান করেন। যোগদানের আট মাসের মাথায় চলতি বছরের ৮ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তাকে বিএসইসির কমিশনার পদে নিয়োগ দেয়। রোববার (১৯ মে) ডিএসইতে ছিল তার শেষ কর্মদিবস।
ড. এটিএম তারিকুজ্জামান তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাব বিজ্ঞানে এমকম এবং সাউথ ইস্টার্ণ ইউনিভার্সিটি (ইউকে ক্যাম্পাস) থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে উপ-পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন।
source: https://www.risingbd.com/economics/stock-market/555927
dr.tarikujjaman smart pujibazar sushason