১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ভ্যাট নিয়ে টানাটানি চলছে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট ও পদ্মা অয়েল কোম্পানির মধ্যে। বিদেশি এয়ারলাইনসের কাছে জেট ফুয়েল বিক্রি করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল। এটাকে রপ্তানি হিসেবে দেখিয়ে ভ্যাট দিচ্ছে না তারা। কিন্তু ভ্যাট কমিশনারেটের দাবি, রপ্তানি হলে বিল ডলারে নেওয়ার কথা। কিন্তু পদ্মা অয়েল বিল নেয় দেশীয় মুদ্রা টাকায়। কাজেই এটা বিক্রি। ভ্যাট তাদের দিতেই হবে।
ভ্যাট কর্তৃপক্ষের হিসাবে, ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত করা অডিটেই ভ্যাট ফাঁকি ধরা পড়েছে ১ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। আর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব করলে এ অঙ্ক দ্বিগুণ হতে পারে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) উভয় পক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের পক্ষ থেকে এনবিআরের ভ্যাট নীতির সদস্যকে দেওয়া একটি চিঠির সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)-এর সহযোগী সংস্থা পদ্মা অয়েল কোম্পানি আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী বিদেশি এয়ারলাইনসের কাছে জেট ফুয়েল বিক্রি করছে। বিক্রির বিল গ্রহণ করছে স্থানীয় মুদ্রা টাকায়। আর টাকায় পণ্য বিক্রি করলে এর ওপর ভ্যাট প্রযোজ্য। এ হিসাবে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত একটি অডিট বা নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে ভ্যাট কমিশনারেট পদ্মা অয়েলকে ১ হাজার ৪১১ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির একটি দাবিনামা দেয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআরে একটি সভা হয়। ওই সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান ও পদ্মা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অংশ নেন। এতে সিদ্ধান্ত হয়, পদ্মা অয়েল নিজেরা একটি কমিটি করে বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। পরে কমিটি প্রতিবেদন দেয় যে ওই সময়ে অভ্যন্তরীণ রুটে ২৫ কোটি লিটার জেট ফুয়েল বিক্রির বিপরীতে ৬০ কোটি টাকা এবং আন্তর্জাতিক রুটে ১৭২ কোটি লিটার জেট ফুয়েল বিক্রির বিপরীতে ১ হাজার ৪১১ কোটি টাকা ভ্যাট প্রযোজ্য হয়।
পরে পদ্মা অয়েল কোম্পানি অভ্যন্তরীণ রুটে জেট ফুয়েল বিক্রির বিপরীতে ৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার ভ্যাট পরিশোধ করে। তবে আন্তর্জাতিক রুটে জেট ফুয়েল বিক্রির বিপরীতে দাবি করা ভ্যাটের ১ হাজার ৪১১ কোটি টাকা শোধ করেনি। ভ্যাট কমিশনারেট দাবি করে, এর ওপর ভ্যাট প্রযোজ্য হবে। এ জন্য এনবিআরের হস্তক্ষেপ চেয়েছে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, পদ্মা অয়েল আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে জেট ফুয়েল বিক্রি করে টাকায় বিল নিয়েছে। তাই এর ভ্যাট হয়। কিন্তু তাদের দাবি বিক্রি নয়, রপ্তানি করেছে। রপ্তানি করলে তো ডলারে বিল নেওয়ার কথা। সেটা হয়নি। সুতরাং পদ্মা অয়েলকে ভ্যাট দিতে হবে। আইনে ভ্যাট না দেওয়ার সুযোগ নেই।
তবে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বিপিসির মাধ্যমে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছি। আমাদের দাবিই সঠিক। ওরা যে ভ্যাট চায়, এটা ঠিক নয়। এর ভ্যাট হবে না। এটা নিয়ে কোনো ঝামেলা নেই।’
source: https://www.ajkerpatrika.com
padma oil NBR 1400 crore taka bangladesh