নিজস্ব প্রতিবেদক: শিগগিরই একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা হবে, যার ভিত্তিতে আর্থিকখাতে স্থিতিশীলতা আনায়নে প্রয়োজনীয় রোডম্যাপ প্রণয়ন করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদ গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিদ্যমান মূল্যস্ফীতি আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব হলে, নীতি সুদ হার এবং ব্যাংক ঋণের সুদের হার হ্রাসসহ অন্যান্য বিষয়সমূহে ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হবে। ব্যাংকের আমানত সংগ্রহের প্রবৃদ্ধি ডাবল ডিজিটে উন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য।
গভর্নর আরো বলেন, শিগগিরই একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা হবে, যার ভিত্তিতে আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা আনায়নে প্রয়োজনীয় রোডম্যাপ প্রণয়ন করবে। এছাড়াও তিনি নতুন বিনিয়োগকারীদের অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে বিনিয়োগ করার পরামর্শ প্রদান করেন।
এসএমইদের ক্রেডিট গ্যারান্টি ফেসিলিটিগুলোকে আরো সচল করার ওপর গভর্নর জোরারোপ করেন। এক্ষেত্রে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবাহ বাড়াতে সরকারি ঋণ গ্রহণের হার সীমিতকরণ করা হবে।
তিনি ট্রেড ক্রেডিট পাওয়ার জন্য উদ্যেক্তাদের পেমেন্ট হিস্ট্রির উন্নয়ন এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, সুদের হার বৃদ্ধি পেলে বিশেষ করে এসএমইদের জন্য ঋণ প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এসএমইদের অর্থায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশকিছু স্কীম রয়েছে, যেগুলোর কার্যক্রম বেগবান করতে পারলে এসএমইদের অর্থায়ন প্রক্রিয়া আরো সহজতর হবে।
এছাড়াও সভায় বৈদেশিক ট্রেড ক্রেডিট প্রক্রিয়া ও বৈদেশিক ঋণ প্রক্রিয়া সহজতর করা, ব্যাংকসমূহে ঋণ প্রবাহ বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন ঢাকা চেম্বার সভাপতি। সর্বোপরি এসএমইদের ঋণ প্রাপ্তিতে বিদম্যান সুদের চাপ কীভাবে আরো হ্রাস করা যায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান ঢাকা চেম্বার সভাপতি।
নীতি সুদহার বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতিসুদহার বাড়ানো একটি প্রচলিত প্রক্রিয়া, তবে এটি সাময়িক সময়ের জন্য প্রযোজ্য।
আশরাফ আহমেদ বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রিত থাকুক এটা আমাদেরও প্রত্যাশা, কারণ মূল্যস্ফীতির ফলে সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যবসায়িদের কর্মকাণ্ড পরিচালন ব্যয়ও বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া ব্যাংকের মন্দঋণের পরিমাণ হ্রাস করা সম্ভব হলে নীতিসুদ হারও হ্রাস পাবে বলে মন্তব্য করে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, এসএমই খাতের বিকাশের লক্ষ্যে সুদের হার বৃদ্ধির চাপ মোকাবেলা এবং ঋণের প্রবাহ বজায়ে রাখায় সহায়তা প্রয়োজন।
এ সময়ে ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার এবং ড. মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।