Home Featured নিয়ম মেনেই সূচক সমন্বয় হয়েছে

নিয়ম মেনেই সূচক সমন্বয় হয়েছে

by fstcap

শেয়ারদরে ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দরসীমা তুলে দেওয়ার পর গত ২১ জানুয়ারি থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত তালিকাভুক্ত ৩৫৬ কোম্পানির মধ্যে ২৭৬টির শেয়ার দর কমেছে। এর মধ্যে ১৭৪টি দর হারিয়েছে সর্বনিম্ন ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৫২ শতাংশ। এমন দর পতনের প্রতিফলন সূচকে নেই বলে মনে করেন শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট অনেকে। কারও কারও ধারণা, প্রকৃত দর পতনের চিত্র আড়াল করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সঙ্গে যোগসাজশে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচক থেকে কিছু ভালো ও বড় শেয়ার বাদ দিয়েছে।

তবে ডিএসই কর্তৃপক্ষের দাবি, এমন সন্দেহের ভিত্তি নেই। ২০১৩ সাল থেকে ডিএসইএক্স সূচক গণনা করা হচ্ছে বিশ্বখ্যাত আর্থিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসঅ্যান্ডপির নিয়মে। প্রতি বছর জানুয়ারির তৃতীয় বৃহস্পতিবার সূচকটি সর্বশেষ ছয় মাসের দৈনিক গড় লেনদেন এবং সর্বশেষ বাজার মূলধনের ভিত্তিতে সমন্বয় হয়। সর্বশেষ গত ১৮ জানুয়ারি সূচকটি সমন্বয়ে ওই নিয়মের কোনো ব্যত্যয় করা হয়নি। তার পরও গত রোববার ডিএসইর এমডি, সিআরওসহ সংশ্লিষ্টদের ডেকে এ বিষয়ে জানতে চায় বিএসইসি।

জানতে চাইলে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম তারিকুজ্জামান সমকালকে বলেন, এ বছর বার্ষিক সূচক সমন্বয়ে আগে ডিএসইএক্স সূচকে থাকা ৮৩টি শেয়ার বাদ পড়েছে এবং যোগ হয়েছে ১৬টি। একবারে এত শেয়ার বাদ পড়ার নজির আগে নেই। আবার একই দিনে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কারণে হয়তো কারও কারও মধ্যে এ রকম সন্দেহ সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে। সূচক গণনা পদ্ধতি জানা থাকলে কারও এমন সন্দেহ হতো না। চাইলে ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সূচক গণনা পদ্ধতির সঙ্গে বর্তমান সূচক যাচাই করার পরামর্শ তাঁর।

ডিএসইএক্স সূচক সমন্বয় করতে গিয়ে এ দফায় যে ৮৩ কোম্পানির শেয়ার বাদ পড়েছে, তার মধ্যে রয়েছে– আইডিএলসি, এসিআই, ইউনাইটেড পাওয়ার, ওয়ালটন, ডেসকোসহ বেশ কিছু বৃহৎ মূলধনি কোম্পানির শেয়ার। বিপরীতে লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, ইমাম বাটন, জাহীন স্পিনিং, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, জিল বাংলা সুগার মিলসের মত রুগ্‌ণ ও বন্ধ কোম্পানি সূচকে ঢুকেছে।
ডিএসইর সূচক গণনা পদ্ধতির সঙ্গে মিলিয়ে সমকালও ডিএসইএক্সের সমন্বয় পরবর্তী অবস্থা পর্যালোচনা করেছে। এ ক্ষেত্রে পূর্বনির্ধারিত নিয়মের ব্যত্যয় লক্ষ্য করা যায়নি। তদুপরি তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির শেয়ার নিয়ে সূচক গণনায় দেখা গেছে, সূচকে সব শেয়ার থাকলে সূচকের সর্বশেষ অবস্থান হতো ৫৮৪৯ পয়েন্ট। যেখানে গতকাল দিনের লেনদেন শেষে সূচকটি আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট বেড়ে স্থির হয় ৬০৯৭ পয়েন্টে। এ ক্ষেত্রে ব্যবধান রয়েছে ২৪৮ পয়েন্ট।

বার্ষিক সমন্বয়ের কারণে ডিএসইএক্সভুক্ত শেয়ার সংখ্যা এখন ২৫০টি, যা আগে ছিল ৩১৭টি। সূচকে মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ড যুক্ত হয় না। ডিএসইএক্স সূচকে কোনো শেয়ার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার নিয়ম হলো– এর বাজার মূলধন কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা এবং সর্বশেষ ছয় মাসে দৈনিক গড় লেনদেন ১০ লাখ টাকা হতে হবে। তবে বার্ষিক সমন্বয়ের সময় যদি আগে সূচকে ছিল এমন শেয়ারের বাজার মূলধন ৭ কোটি টাকা এবং দৈনিক লেনদেন ৭ লাখ টাকা বা তার বেশি থাকে, তাহলে ওই শেয়ার সূচকে থাকবে।

জানতে চাইলে ডিএসইর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় কোনো শেয়ারের বাজার মূলধন ১০ কোটি টাকা বা দৈনিক গড় লেনদেন ১০ লাখ টাকা খুবই কম। অধিকাংশ শেয়ারকে সূচকে রাখতে এ নিয়ম করা হয়। তবে ফ্লোর প্রাইসের কারণে বহু ভালো ও বড় কোম্পানির শেয়ার লেনদেনও তলানিতে নামে, যা দৈবদুর্বিপাক হিসেবে ধরা যায়।
গত ১৮ জানুয়ারির ৬৩৩৬ পয়েন্টকে ভিত্তি পয়েন্ট ধরে তালিকাভুক্ত সব শেয়ার নিয়ে ডিএসইর নিয়মেই একটি সূচক গণনা করেছে সমকাল। এ হিসাবে গত সাত কার্যদিবসে সূচকটি হারাত ৪৮৭ পয়েন্ট। যেখানে এ সময়ে হারিয়েছে ২৩৯ পয়েন্ট।

বাজার সংক্ষেপ
সূচকের পতন থামলেও শেয়ারদর ওঠানামায় মিশ্রধারা ছিল ডিএসইতে। ১৭০ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৭৬টির দর কমেছে এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৩টির দর। এদিন ব্যাংক, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বীমা এবং কাগজ ও ছাপাখানা খাত ছাড়া বাকি সব খাতের বেশির ভাগ দর বেড়েছে। এর মধ্যেও ছয় কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে। গতকাল কেনাবেচা হয়েছে ৬৬২ কোটি টাকার শেয়ার, যা আগের দিনের তুলনায় ২১৮ কোটি টাকা কম।

source: samakal.com

 

niyom mene suchok somonnoy  index according to the rules

You may also like