July 25, 2024 9:00 pm
Home Finance ২০২৩ সালে আইপিওতে ধস

২০২৩ সালে আইপিওতে ধস

by fstcap

২০২৩ সাল পুঁজিবাজারের জন্য ছিলো চ্যালেঞ্জিং। যার প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে। গত বছর মাত্র তিনটি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকুভুক্ত হয়েছে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সুত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে ৫২টি কোম্পানি। এর মধ্যে ২০২৩ সালে ২টি কোম্পানি ৮৬ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। গত ২০২১ সালে ৩ কোটি ৩৬ লাখ নয় হাজার ৪০ টাকা উত্তোলন করেছিলো ১৪ টি কোম্পানি যা এ যাবতকালের এক ক্যালেন্ডার বছরে সর্বোচ্চ। বিএসইসি সুত্রে আরো জানা যায়, বর্তমানে প্রটেকটিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড নামক একটি কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসার অপেক্ষায়। এছাড়া বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড আইপিও অনুমোদন পেয়েছে। পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনে অনুমোদন পাওয়াবেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন শুরু হবে আগামী ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪; যা চলবে ১৮ জানুয়ারি, ২০২৪ পর্যন্ত।এছাড়া প্রটেকটিভ ইসলামী লাইফ এক কোটি ৫০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে ১৫ কোটি টাকা উত্তোলনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

২০২৩ সালে মাত্র দুটি কোম্পানি বাজারে লেনদেন শুরু করেছে। মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড ও বিমা খাতের কোম্পানি ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। কোম্পানি দুটি পুঁজিবাজার থেকে ৭০ ও ১৬ কোটি টাকাসহ মোট ৮৬ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। এর আগের বছর অর্থ্যাৎ ২০২২ সালে মোট ছয়টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিগুলো আইপিওর মাধ্যমে ৬২৬ কোটি ২৬ লাখ ১০ হাজার ৬০ টাকা উত্তোলন করে। কোম্পানিগুলো হচ্ছে- জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ও নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস।

২০২১ সালে তালিকাভুক্ত হয়েছিলো ১৪টি কোম্পানি। কোম্পানিগুলো শেয়ার ছেড়ে বাজার থেকে ১২৩৩ কোটি ৩৬ লাখ নয় হাজার ৪০ টাকা উত্তোলন করেছে যা গত ৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। কোম্পানিগুলো হচ্ছে: তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম, ই-জেনারেশন, লুব-রেফ (বাংলাদেশ), এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, এসিএমই প্যাস্ট্রিসাইডস, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ও ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড।

আটটি কোম্পানি উত্তোলন করে ৯৮৫ কোটি ৮৭ লাখ ২৩ হাজার ৩৪০ টাকা করে ২০২০ সালে। কোম্পানিগুলো হচ্ছে- এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেন, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, রবি আজিয়াটা, অ্যানার্জি প্যাক জেনারেশন ও মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড। ২০১৯ সালেও আটটি নতুন কোম্পানি পুঁজিয়াবাজারে আসে। ৫৫২ কোটি টাকা মার্কেট থেকে সংগ্রহ করে পুঁজিয়াবাজারে আসা কোম্পানিগুলো। কোম্পানিগুলো হচ্ছে- স্কয়ার নিটিং কম্পোজিট, রানার অটোমোবাইলস, নিউ লাইন ক্লোথিংস, সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড, রিং শাইন টেক্সটাইল ও এডিএন টেলিকম। ২০১৮ সালে ১৩ কোম্পানি বাজার থেকে ৫৪৬ কোটি টাকা উত্তোলন করে। কোম্পানিগুলো হচ্ছে- কুইন সাউথ টেক্সটাইল, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, বসুন্ধরা পেপার মিলস, এসকে স্টিম অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, আমান কটন ফাইবার্স, ভিএফএস থ্রেড ডাইং, এমএল ডাইং, সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, কাট্টালি টেক্সটাইল, এসএস স্টিল ও জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড।

হঠাৎ করে আইপিওতে আসতে চাওয়া কোম্পানির সংখ্যা কমেছে নাকি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনুমতি দিচ্ছে না এমন প্রশ্নে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম দ্য রিপোর্টকে বলেন, “যথোপযুক্ত ডকুমেন্টসহ আবেদন করলে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আমরা অল্পসময়েই অনুমতি দিয়ে থাকি”। পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ মনে করেন, ” তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের পার্থক্য বাড়াতে হবে। তাহলে তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ খুঁজবে অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো। অতিরিক্ত কোন সুবিধা না থাকলে কেনো বাজারে আসবে। বর্তমানে করহারের তেমন পার্থক্য তেমন নাই”।তিনি আরো বলেন, ‘বাজারকে তাঁর নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে।’এছাড়া বছরের বেশিরভাগ সময় ধরে বাজার মন্দা থাকায় নতুন কোম্পানি আসার আগ্রহ পায়নি বলে মনে করেন আবু আহমেদ।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে কোম্পানিগুলোকে অধিকহারে কর ছাড়ের সুবিধা দিতে হবে মনে করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, “নীতিগত পরিবর্তন না আনলে আসবে না ভালো কোম্পানি। বিএসইসি, এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে আমাদের প্রস্তাবনা গুলো দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করি এসব প্রস্তাব আলোচনায় আনা হবে। প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করা হলে বাজারে শক্ত মৌলভিত্তির কোম্পানি তালিকাভুক্ত হতে বেশী আগ্রহী হবে।”

source: thereport24.com

 

IPO dhos 2023

You may also like