টানা তিন কার্যদিবস বড় দরপতনের পর গতকাল সোমবার দেশের শেয়ারবাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান থাকার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে সিএসইতে টানা চার কার্যদিবস সূচক কমল।
এর আগে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। এতে পাঁচ দিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা কমে যায়। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববারও শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়।
তবে সোমবার লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। ২০০-এর অধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় লেনদেনের আধাঘণ্টার মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ২০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে এরপর কয়েক মিনিটের মধ্যে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। ফলে সূচকও ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।
অবশ্য অল্পসময়ের ব্যবধানে শেয়ারবাজার আবার ঘুরে দাঁড়ায়। দাম কমার তালিকা থেকে বেরিয়ে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৭০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৬টির। আর ৪৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের দাম কমার পরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৯৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১০৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬৬২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮৮০ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২১৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের শেয়ার। দিনভর কোম্পানিটির ৩৮ কোটি ৬০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফু-ওয়াং ফুডের ৩০ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে, ওরিয়ন ইনফিউশন, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, এনভয় টেক্সটাইল, আফতাব অটোমোবাইল, অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ, ইনটেক লিমিটেড ও সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৫৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৬টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
source: