নানামুখী অর্থনৈতিক সংকটের মুখে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ পাকিস্তান ও শ্রীলংকা। দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হতে হয়েছে তাদের।
নানামুখী অর্থনৈতিক সংকটের মুখে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ পাকিস্তান ও শ্রীলংকা। দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হতে হয়েছে তাদের। বিভিন্ন ধরনের সংস্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছে দেশ দুটি। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলংকার পুঁজিবাজারে। বর্তমানে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের পুঁজিবাজার। সর্বশেষ গত ২৫ অক্টোবর শেষে কেএসই-১০০ সূচক ৯০ হাজার ১২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। একই দিকে যাচ্ছে শ্রীলংকার পুঁজিবাজারও। একই সময় সিএসইঅল সূচক দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৫১৭ পয়েন্টে। দেশ দুটির তুলনায় অর্থনৈতিক সংকটের মাত্রা কম হলেও বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। টানা দরপতনের প্রভাবে গতকাল দেশের পুঁজিবাজার কভিডের পর সর্বনিম্ন অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে।
কভিডের সময় দেশের পুঁজিবাজার ৩ হাজার ৬০০ পয়েন্টে নেমে এসেছিল। এর পর থেকেই ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা যায় এবং ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ৭ হাজার ৩০০ পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়। তবে এর পর থেকে আবার পতনের বৃত্তে পড়ে যায় দেশের পুঁজিবাজার। কখনো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, কখনো অর্থনৈতিক সংকট, কখনো ডলার সংকটের কারণে অস্থিরতা দেখা গেছে পুঁজিবাজারে। জাতীয় নির্বাচনের পর এ বছরের শুরুতে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা ছিল। শুরুর দিকে কিছুদিন সে ধরনের প্রবণতা দেখাও গিয়েছিল। যদিও ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আবারো দরপতনের ধারায় ফিরে আসে পুঁজিবাজার। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়। যার প্রভাব দেখা যায় এর পরের বেশ কয়েকদিনের লেনদেনে। যদিও এর কিছুদিন পর থেকেই আবারো সেই পতনের বৃত্তেই আটকা পড়েছে পুঁজিবাজার। সর্বশেষ গতকাল দেশের পুঁজিবাজার প্রায় ৩ শতাংশ দরপতন হয়েছে এবং দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচক ৪ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গত আড়াই মাসে এক হাজারের বেশি পয়েন্ট হারিয়েছে পুঁজিবাজার।
দেশের পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক দরপতনের পেছনে তারল্য সংকট ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকটকে দায়ী করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে সুদের হার বেড়ে যাওয়ার কারণেও পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগ সরে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া অতীতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে সূচক ধরে রাখার যে প্রবণতা ছিল সেটি বর্তমানে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় অতীতে পুঁজিবাজারে ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকা অনিয়ম, দুর্নীতি ও কারসাজির অনিবার্য পরিণতি বর্তমানে আগের চেয়েও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য তারল্য সহায়তা হিসেবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ৩ হাজার কোটি টাকা প্রদানের বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে।
এ বিষয়ে আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘নীতি সুদহার বৃদ্ধি, জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ কমে যাওয়া, রফতানি ও রিজার্ভের মতো ইস্যুগুলো পুঁজিবাজারের নিম্নমুখিতার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। মার্জিন ঋণের কারণেও বাজারে একটি প্রভাব পড়েছে। সরকারের কাছে আইসিবি ৩ হাজার কোটি টাকার তহবিল চেয়েছে। পুঁজিবাজারের জন্য এটি খুব বেশি অর্থ নয়। তবে এ অর্থ হাতে আসার পর আইসিবি বিনিয়োগ করা শুরু করলে অন্য বিনিয়োগকারীরাও তখন এগিয়ে আসবেন।’
মূল্যস্ফীতি ও ডলার সংকট চরম পর্যায়ে ওঠার পর দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকায় জনঅসন্তোষ তৈরি হয়। যার প্রভাবে রাজাপাকসে সরকারকে বিদায় নিতে হয়েছে। এরপর দেশটি অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু করে, যার সুফল বর্তমানে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি দেশটিতে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। গত সেপ্টেম্বরে দেশটির মূল্যস্ফীতি ছিল ঋণাত্মক দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থনীতির পাশাপাশি শ্রীলংকার পুঁজিবাজারও ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। যদিও দেশটির ঘাড়ে এখনো বড় অংকের ঋণের বোঝা রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এর অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার সঠিক পথে এগোচ্ছে। শ্রীলংকার সিএসইঅল সূচক ১৩ হাজার পয়েন্টে উঠেছিল ২০২২ সালের জানুয়ারিতে। এরপর কিছুটা সংশোধন হলেও তা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় আছে। সর্বশেষ ২৫ অক্টোবর সিএসইঅল সূচকটি দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৫১৭ পয়েন্টে।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ঋণভার, সরকার পরিবর্তন হওয়ার মতো ঘটনার দিক দিয়ে মিল রয়েছে। শুধু একটি দিক দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মিল নেই সেটি হচ্ছে সুশাসন। পাকিস্তান ও শ্রীলংকার পুঁজিবাজারে সুশাসনের ঘাটতি ছিল না। আমাদের মতো সেখানে বিএসইসির চেয়ারম্যান পালিয়ে যান নাই। পৃথিবীর ইতিহাসে কখনো পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান পালিয়ে গেছেন এমন নজির নেই। এখন যে সুশাসন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে সেটি কি দৃশ্যমান? শেয়ারের দাম অবমূল্যায়িত তাও মানুষ কিনছে না। পুঁজিবাজার এক পর্যায়ে গিয়ে নিজেই ঘুরে দাঁড়াবে, সেটা ভিন্ন বিষয়। অতীতে পুঁজিবাজার সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা সমাধানে করণীয় কী হবে সেটি সবসময় নিয়ন্ত্রক সংস্থার লেন্স দিয়েই দেখা হয়েছে। বর্তমানেও এ প্রবণতার পরিবর্তন হয়নি বলেই মনে হচ্ছে। পুঁজিবাজারের সমস্যা সমাধানে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন।’
অর্থনৈতিকভাবে বেশ কঠিন সময় পার করছে পাকিস্তান। অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারণে এক পর্যায়ে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ঠেকেছিল দেশটি। অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি কেনারও অর্থ ছিল না দেশটির কাছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে শেষ পর্যন্ত আইএমএফের দ্বারস্থ হয় পাকিস্তান। এ অবস্থায় গত বছরের জুলাইয়ে দেশটিকে ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ দিতে সম্মত হয় আইএমএফ। এতে দেশটির অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। ঋণ অনুমোদনের খবরে গত বছর দেশটির পুঁজিবাজারের সূচক একদিনেই ২ হাজার ৪০০ পয়েন্টের বেশি বেড়েছিল। ব্লুমবার্গের পর্যবেক্ষণ অনুসারে, পাকিস্তানের পুঁজিবাজার সে সময় বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা বাজারের তালিকায় উঠে এসেছিল। দেশটির পুঁজিবাজারের এ ঊর্ধ্বমুখিতা এখনো দেখা যাচ্ছে। সর্বশেষ ২৫ অক্টোবর পাকিস্তানের বেঞ্চমার্ক সূচক কেএসই-১০০ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৯০ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়েছে।
ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পাকিস্তান ও শ্রীলংকার আর্থিক খাত অত্যন্ত পেশাদারত্বের সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর ফলে যে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে, সেটি এত তাড়াতাড়ি দূর করা সম্ভব নয়। তাছাড়া শ্রীলংকা যখন অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছে, তখনই তারা সেটিকে স্বীকার করে যথাসময়ে তা সমাধানে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। যার ফল তারা এখন পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানে অনেক দেরিতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় ফল আসছে না। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে অর্থনীতিতে সংস্কার কার্যক্রমের কিছু ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাবে বলে আশা করা যায়। সে সময় পর্যন্ত কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবেগতাড়িত হওয়ার প্রবণতা বেশি। এক্ষেত্রে বর্তমানে তাদের মধ্যে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, সেটি দূর করতে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে যোগাযোগের মাধ্যমে আশ্বস্ত করার মতো উদ্যোগ প্রয়োজন। এর পাশাপাশি মূলধনি মুনাফায় কর অব্যাহতির মতো কিছু নীতি পদক্ষেপ ত্বরিত উদ্যোগ হিসেবে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।’
প্রতিবেশী ভারতের পুঁজিবাজারে বর্তমানে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির প্রবণতার কারণে কিছুটা নিম্নমুখিতা দেখা যাচ্ছে। তবে সার্বিকভাবে দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক ধারায়ই রয়েছে দেশটির পুঁজিবাজার। এ বছরের আগস্টে বিএসই সেনসেক্স সূচক ইতিহাস সর্বোচ্চ ৮৪ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ ২৫ অক্টোবর সূচকটির অবস্থান ছিল ৭৯ হাজার ৪০২ পয়েন্টে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের পুঁজিবাজারে কারসাজি চক্রের দৌরাত্ম্যের কারণে জাঙ্ক শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদেরও আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কারসাজি চক্রকে অনুসরণ করে অনেকে এসব শেয়ারের প্রতি ঝুঁকেছেন। বর্তমানে পরিবর্তিত পরিস্থিতি কারসাজি চক্রের সদস্য বাজার থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে। এ অবস্থায় বাজারে কিছুটা তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে জাঙ্ক শেয়ার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকে মার্জিন ঋণ নিয়েছেন। এ অবস্থায় শেয়ারের দাম কমার কারণে মার্জিন ঋণ নেয়া বিনিয়োগকারীরা বেশি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। ক্ষেত্রবিশেষে ফোর্স সেলও হচ্ছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে তাদের কাছে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে শেয়ার বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
দেশে গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) শীর্ষ নেতৃত্ব ও প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর পর্ষদ সদস্য নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। যার প্রভাব সে সময় পুঁজিবাজারে পড়েছিল। কয়েক দফায় পরিবর্তনের পর বিএসইসির নতুন কমিশন ও ডিএসইর নতুন পর্ষদ গঠিত হওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরে আসবে। তারা মনে করেছিলেন পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার নতুন তরঙ্গ দেখা যাবে। যদিও ধারাবাহিক দরপতনের কারণে তাদের সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
জানতে চাইলে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে মাত্র আড়াই মাস হয়েছে। এখনো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে ওঠেনি। ফলে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস ফিরে আসতে কিছুটা সময় লাগবে। আমাদের রাজস্ব আয় কম হওয়ার কারণে সরকারকে ট্রেজারি বিল-বন্ডের মাধ্যমে অর্থ ধার করে চলতে হয়, যা সুদের হারকে বাড়িয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের পরিবর্তে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বন্ডের দিকে ঝুঁকছেন। এতে বাজারে তারল্য সরবরাহ কমে গেছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে বিএসইসির নতুন নেতৃত্বের পুঁজিবাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নেই। তাদের বুঝতে হবে এটি ব্যাংক নয়, পুঁজিবাজার। এখানে বাজারের খেলোয়াড়দের সঙ্গে সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে এগোতে হয়। কিন্তু মনে হচ্ছে কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর তাদের সঙ্গে একটি সংঘাতপূর্ণ অবস্থানে চলে গেছে। কারসাজি চক্র এ সুযোগটিকে কাজে লাগিয়েছে বলেই আমার ধারণা। কমিশন এক-দুই মাসের মধ্যেই যেসব কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে সেটি ছয় মাসে বাস্তবায়ন করলেও চলত। এর ফলে বিনিয়োগকারীরাও দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে গেছেন। এক্ষেত্রে ধীরে এগোনোই ভালো ছিল।’
stock market sharebazar Bangladesh Pakistan Shri-lanka