Home Stock Market জাহাজ শিল্পে পুরোদমে ফিরছে বাংলাদেশ

জাহাজ শিল্পে পুরোদমে ফিরছে বাংলাদেশ

by fstcap

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বৈশ্বিক মন্দা এবং সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়া বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প আবারও আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করছে। সরকারের নীতিগত সহায়তা এবং দেশীয় শিপইয়ার্ডগুলোর নিরলস প্রচেষ্টায় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পুনরায় জাহাজ রপ্তানি শুরু হয়, যা দেশের অর্থনীতিতে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।

 

জানা যায়, ২০০৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ডেনমার্কে জাহাজ রপ্তানি করে ঢাকার আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড স্লিপওয়েজ। এরপর ২০১০ সালের ৩০ নভেম্বর জার্মানিতে সমুদ্রগামী জাহাজ রপ্তানি করে নিজেদের নাম লেখায় চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড।

 

 

আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের নির্মিত জাহাজ নির্মাণ ব্যয় সর্ববৃহৎ জাহাজ নির্মাণকারী দেশ চীনের তুলনায় ১৫% কম। আন্তর্জাতিক বাজারে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে ২০০ বিলিয়ন ডলারের শতকরা দুই ভাগ অর্ডার পেলে বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ শিল্পে অনেক এগিয়ে যাবে। জাহাজ নির্মাণ শিল্পে প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয়। যা এ দেশের শিপইয়ার্ড মালিকদের কাছে নেই। মূলধন সমস্যা সমাধান করতে পারলেই শিপইয়ার্ডগুলো লাভের মুখ দেখতে পারবে। জাহাজ রপ্তানিতে বাংলাদেশের শিপইয়ার্ডগুলো মাত্র শতকরা ৫ ভাগ ইনসেনটিভ পায়। ভারতে পায় শতকরা ২৫ ভাগ।

 

 

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল সুবিশাল সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় এখানে জাহাজ নির্মাণের অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে নদী তীরবর্তী অঞ্চলে অনেক জায়গা আছে। এ রকম একটি অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের ব্যাপক বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।

 

 

কিন্তু এ শিল্পে সম্ভাবনা থাকলেও ২০১১ সাল থেকে বৈশ্বিক জাহাজ নির্মাণ শিল্পের মন্দার মূল প্রভাব পড়তে শুরু করে বাংলাদেশে। এরপর শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। তখন ক্রমাগত রপ্তানি আদেশ বাতিল করে বিদেশি ক্রেতারা। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সরকারের নীতি সহায়তায় বাংলাদেশ থেকে আবারও জাহাজ রপ্তানি শুরু হয়।

 

 

২০২৩ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক মারওয়ান শিপিংয়ের সঙ্গে আটটি জাহাজ নির্মাণের জন্য চুক্তি সই করে ওয়েস্টার্ন মেরিন। এর আগে ২০১৭ সালে মারওয়ান শিপিংয়ের জন্য একটি জাহাজ রপ্তানি করেছিল ওয়েস্টার্ন মেরিন। সেই সফল রপ্তানির সূত্র ধরেই মারওয়ান শিপিং নতুন এই চুক্তিতে আগ্রহ দেখায়।

 

জানা গেছে, রপ্তানির পাশাপাশি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনকে (বিআইডব্লিউটিএ) দুটি যাত্রীবাহী জাহাজ ‘এমভি রূপসা’ ও ‘এমভি সুগন্ধা’ সরবরাহ করবে ওয়েস্টার্ন মেরিন। ওয়েস্টার্ন মেরিন এখন পর্যন্ত ১১টি দেশে ৩৩টি জাহাজ রপ্তানি করেছে, যার মোট মূল্য ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি।

 

 

উল্লেখ্য, ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ রয়াল নেভীর জন্য জাহাজ তৈরি হতো এই বাংলায়। বর্তমানে পৃথিবীর মধ্যে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে চীন,জাপান, কোরিয়া সবার শীর্ষে আছে।সঠিক যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন করে বাংলাদেশও জাহাজ নির্মাণ শিল্পে চীনের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে। জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি চীন, কোরিয়া এবং জাপানের তুলনায় অনেক কম। কিন্তু দক্ষতার দিক দিয়ে বাংলাদেশের শ্রমিকরা অনেক এগিয়ে আছে।

https://dailyinqilab.com/national/news/822203

WMSHIPYARD

You may also like