Home Stock Market আরএসআরএম স্টিলের উৎপাদন বন্ধ চার বছর

আরএসআরএম স্টিলের উৎপাদন বন্ধ চার বছর

by fstcap

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি রতনপুর স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলস (আরএসআরএম)। বিগত সরকারের আমলে পুঁজিবাজার থেকে টাকা তুলে নেয়া কোম্পানিটির ব্যবসায়িক কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। বিদ্যুৎ, তারল্য ও কাঁচামাল সংকটের কারণে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না কোম্পানিটি। অন্যদিকে চট্টগ্রামভিত্তিক রতনপুর গ্রুপের এ কোম্পানির বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সেইসঙ্গে এরই মধ্যে ঋণখেলাপি হয়েছে পড়েছে রতনপুর স্টিল। তাই বিতর্কিত এ কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরই মধ্যে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তথ্যমতে, বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে আরএসআরএমের বিষয়ে তদন্তের জন্য ১০টি নির্দেশনা দিয়ে একটি আদেশ দেয়া হয়েছে। তদন্তের বিষয়ে আরএসআরএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও চিঠি দিয়ে জানিয়েছে বিএসইসি।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসির তদন্ত কমিটি আরএসএম স্টিলের কারখানা, অফিস, আর্থিক হিসাব ও ব্যবসায়িক অন্য কার্যক্রমের বিষয়ে খতিয়ে দেখবে। আয় ও ব্যয় নিয়ম মেনে হয়েছে কিনা- তাও খতিয়ে দেখবে বিএসইসির কমিটি। সেইসঙ্গে আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেয়া, সামগ্রিক ব্যবসায়িক অবস্থা, ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা, আইপিও প্রসপেক্টাস অনুসারে আইপিও’র অর্থ ব্যবহার, অর্থ পাচারের মামলা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ওঠা সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের বিষয়ও যাচাই-বাছাই করবে তদন্ত কমিটি।

দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ২০২২ সালের ৪ জুলাই বিএসইসিতে আরএসআরএমের বিষয়ে পৃথক একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। যেখানে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে বেশকিছু আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই বিষয়েও খোঁজ নেবে তদন্ত কমিটি। ২০২১ সালের ৩০ জুনের পর আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেয়া, ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা এবং ঋণ ও মূলধন ব্যবহারে অনিয়মও খতিয়ে দেখবে কমিটি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কোম্পানিটির বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি। বিগত সরকারের আমলে বিতর্কিত পন্থায় পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করা কোম্পানিটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিএসইসি। তবে পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসি বিতর্কিত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আরএসআরএমের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৪ সালে পুঁজিবাজার থেকে প্রিমিয়ামসহ মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ সংগ্রহ করে আরএসআরএম। এর ছয় বছর পরই ২০২০ সালের শেষদিকে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। লোকসান, বৈদ্যুতিক জটিলতা ও কাঁচামাল সংকটকে উৎপাদন বন্ধের জন্য দায়ী করে কোম্পানিটির দায়িত্বশীলরা। বারবার ফেরার কথা বলা হলেও আর উৎপাদনে ফিরতে পারেনি আরআরএসএম স্টিল। এরই মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে কোম্পানিটর ঋণ প্রায় ১৯ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ঋণখেলাপির তালিকায়ও নাম উঠেছে কোম্পানিটির।

এদিকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিক বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি আরএসআরএম। এর আগে ২০২০ সালে বিনিয়োগকারীদের সর্বশেষ ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। ২০২১ সালের পর আর কোনো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি কোম্পানিটি। পাঁচ বছর ধরে কোম্পানিটি পরিচালনা পর্ষদ বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশও দেয়নি। স্টক এক্সচেঞ্জকেও ২০২১ সালের পর কোনো তথ্য দেয়নি আরএসআরএম।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে রতনপুর স্টিল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে উৎপাদন বন্ধ, আর্থিক প্রতিবেদন ও লভ্যাংশ না দেয়ায় বর্তমানে কোম্পানিটি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। বর্তমানে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে ২৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ব্যবসায়িক অশ্চিয়তার কারণে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দর কমছে। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার দর অভিহিত মূল্যের নিচে রয়েছে। গতকাল কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৮ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

https://sharebiz.net/আরএসআরএম-স্টিলের-উৎপাদন-2/

RSRMSTEEL RSRM

You may also like