পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে চাহিদার অর্ধেক বা ৫০ শতাংশ ব্যাগ কিনবে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মানিক উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে গত ১ সেপ্টেম্বর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এ সিদ্ধান্তে মিরাকেলের অর্ডার বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি হবে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও উপকৃত হবেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, বিসিআইসিকে বাধ্যতামূলকভাবে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হবে।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথমবার মিরাকেলকে বিসিআইসির মোট চাহিদার ২০ শতাংশ ব্যাগ সরবরাহের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ঐতিহাসিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি বিসিআইসির শতভাগ ব্যাগ সরবরাহ করলেও ২০০৭ সালে সরকার উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে অর্ডার দেওয়ার নীতি গ্রহণ করে। দীর্ঘ বিরতির পর আবার অর্ডার পুনরায় শুরু হয়।
এ খবরে বাজারে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। গত ১১ কার্যদিবসে মিরাকেলের শেয়ারদর ২৭ শতাংশ বেড়ে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ডিএসইতে ৩৩ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন শেষ হয়। আজ মঙ্গলবারও (৯ সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ার ইতিবাচক ধারায় লেনদেন হচ্ছে।
তবে কোম্পানিটি এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি।
এ বিষয়ে মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজের কোম্পানি সচিব মো. ওমর ফারুক বাণিজ্য বার্তাকে বলেন, “আমরা এখনো কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি।”
বিসিআইসি কর্মকর্তারা বলছেন, বিসিআইসির ব্যাগের চাহিদা মূলত সার উৎপাদন ও আমদানির ওপর নির্ভরশীল। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিসিআইসি মোট ২৭ লাখ টন ইউরিয়া সারের চাহিদা অনুমান করেছে। এর মধ্যে ১০ লাখ টন উৎপাদন এবং ১৭ লাখ টন আমদানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
১৯৯৫ সালে বিসিআইসি ও চার উদ্যোক্তার যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ উৎপাদন করে—যার মধ্যে সিমেন্ট, সার, লবণ, ফিড, চিনি, খাদ্যশস্য ও কেমিক্যালস অন্যতম। কোম্পানির দুটি কারখানা রয়েছে গাজীপুর ও শ্রীপুরে—একটি স্থানীয় বাজারের জন্য এবং অন্যটি রপ্তানিমুখী।
২০২৩ সালের আগস্টে লুৎফুজ্জামান বাবরের পরিবারের কাছ থেকে মিরাকেলের নিয়ন্ত্রণ নেয় মেহমুদ ইকুইটিজ লিমিটেড। এরপর বোর্ডে তিন পরিচালক নিয়োগ এবং কার্যক্রম পুনরায় চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম সাহাবুব আলম এবং পরিচালক শওকত মেহমুদ ও নায়ান মেহমুদ।
মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ ২০১৯ অর্থবছর পর্যন্ত লাভজনক ছিল। ওই বছর কোম্পানির রাজস্ব আয় হয় ৬০ কোটি টাকা এবং নিট মুনাফা দাঁড়ায় ৭৭ লাখ টাকা। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ রাজস্ব ও মুনাফা অর্জন করে। তবে ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডার দ্বন্দ্বের কারণে রাজস্ব ৮৫ শতাংশ কমে মাত্র ৯ কোটি টাকায় নেমে আসে এবং ১২ কোটি টাকার রেকর্ড ক্ষতি হয়। সে সময় থেকেই রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়, যদিও ২০১৯ সালেই সর্বশেষ ২৩ কোটি টাকার রপ্তানি আয় হয়েছিল।
সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জানুয়ারি–মার্চ প্রান্তিকে মিরাকল ২ কোটি ২৬ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ক্ষতি হয়েছিল ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ওই প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ক্ষতি দাঁড়ায় ৬৪ পয়সা।
miracle
https://banijjobarta.net/12651/%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%B2-%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9C-%E0%A6%A5%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%87/?fbclid=IwZXh0bgNhZW0CMTEAAR5RSJuPgUOrgaPqjfwGnpuKGN-IDnB85mXVrSOO3J1CGt4A7p8rU1y2Yiyq3A_aem_q6q_IxV5Y70bTfyED07aig