মাত্র ৬ দিনে ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স প্রেরণ এবং বৈধপথে আরো রেমিট্যান্স পাঠানোর দৃঢ় প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছে মালয়েশিয়া প্রবাসীরা। নতুন সরকারের অধীনে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে এমন ঘোষণা দিয়েছে তারা।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বৈধপথে রেমিট্যান্স প্রেরণে দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোতে লক্ষ্য করা গেছে প্রবাসীদের ভিড়। এছাড়া অনেকেরই ফেসবুকে দেখা গেছে রেমিট্যান্স প্রেরণের পর মানি রিসিটের ছবি পোস্ট করতে।
মালয়েশিয়া প্রবাসি ফিরোজ খান, গতকাল কুয়ালালামপুরের সিটি ব্যাংকের, সিবিএল মানি ট্রান্সফার থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠিয়ে মানি রিসিটের ছবি সহ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, পাঠাও রেমিটেন্স বাঁচাও দেশ, প্রবাসীরাই গড়বে বাংলাদেশ। ইনশাআল্লাহ!
বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো চ্যানেলগুলো বলছে, চলতি বছরের জুনে তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫৪ কোটি ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠানো হয় দেশে। জুলাইয়ের শুরুতেও এ ধারা অব্যাহত ছিলো ভালোই। তবে, জুনের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবাহ নেমে আসে প্রায় ২৫ শতাংশে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, জুলাইয়ে রেমিট্যান্স পাঠানোর হার ছিলো ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। আগস্টের প্রথম তিন দিনে দেশে রেমিট্যান্স যায় সাড়ে ৯ কোটি ডলার। এর পরের তিন দিন নামে ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্থবিরতা, সরকার পতনের পর ১০ আগস্ট পর্যন্ত তিনদিনে মোট রেমিট্যান্স বাংলাদেশ গেছে ৩৮ কোটি ডলার।
এদিকে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর তথ্যমতে, ৬ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত মালয়েশিয়া থেকে বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে প্রবাসীরা দেশে প্রেরণ করেছে প্রায় ১২৫ থেকে ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৫ হাজার ৭শ মিলিয়ন টাকা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ রাখে মালয়েশিয়া প্রবাসীরা। যা ছিলো আন্দোলনের অর্থনৈতিক অব্যর্থ অস্ত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক প্রবাসী বলেন, প্রায় ১১ বছর পর ব্যাংকে আসছি টাকা পাঠাতে।
এখন থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাবো। ব্যাংকে টাকা পাঠালে দেশের উন্নতি হবে।
বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, আইনের সুশাসন, প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ, অভিবাসন ব্যয় কমানো ও প্রবাসে ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের প্রতি আহবান জানাই।
বিগত দিনের নানা লাঞ্ছনা-বঞ্ছনার শিকার হওয়া প্রবাসীরা বলছেন, এয়ারপোর্টে অনেক ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদের। সেই ভোগান্তিগুলো অবিলম্বেই যেন সমাধান হয়। দেশে যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে তা ফিরিয়ে আনবেন বলে দৃঢ়তার সঙ্গে বলছেন অর্থনৈতিক এ যোদ্ধারা।