অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিসমূহকে পোশাক, গ্যাস, পেট্রোলিয়াম, ওষুধ ও ব্যাংকিং খাত বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে (ফিনটেক) বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজধানীর একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) এর মাসিক মধ্যাহ্ন ভোজসভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এবারের ভোজসভার আলোচনার বিষয় ছিল ‘ড্রাইভিং ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশন ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ এবং ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরি করতে চাই। মার্কিন কোম্পানি মাস্টারকার্ড এবং ভিসাকার্ড বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। আরও যেসব মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি রয়েছে, তারাও এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারে।’
অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কর্মাসিয়াল কাউন্সিলার (ফরেন কর্মাসিয়াল সার্ভিন) জন ফে।
আর্থিক খাতে অনলাইন সেবা প্রদান প্রসঙ্গে ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, অনলাইন সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বেসরকারিখাত অনেক ভাল করছে। এর পাশাপাশি বিকাশ ও নগদ এর মত মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস এর কারণে গ্রামীণ এলাকায় সাধারণ মানুষ আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় এসেছে।
ওয়াসিকা বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন ও ই-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং এক্সেস টু ফিনান্সিয়াল সার্ভিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একইসাথে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত এটি। অনলাইন লেনদেনকে উৎসাহিত করতে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে এক ব্যবসায়ীর প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকের সুদহার বাজারভিত্তিক করা হচ্ছে এবং মুদ্রা বিনিময় হার পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে এর ইতিবাচক ফল পেতে শুরু করেছি। জুন মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছে।’ তিনি বলেন, সুদহার যখন নয়-ছয় ছিল সে সময় আমরা খেলাপি হওয়ার মত অনেক ঘটনা দেখেছি। ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন সরবরাহে বাজারভিত্তিক সুদহার কেমন হয়, সেটা দেখার জন্য আরও কিছুটা সময় দেওয়ার প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ব্যবসায় পরিবেশের উন্নয়নে কর-রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় অটোমেশন চালু করতে সরকার সর্বাত্বক কাজ করে চলেছে।
মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভূরাজনৈতিক ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে আমরা সময় পার করছি। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে নিত্যপয়োজনীয় পণ্য নিয়মিত আমদানি করতে হচ্ছে। তবে সরকার দেশের সকল অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সমাধানে নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, তরুণ উদ্যোক্তাদের উৎসাহ প্রদানের ক্ষেত্রে স্টার্টআপ বাংলাদেশে যথেষ্ট সফল উদ্যোগ। এবারের বাজেটে স্টার্টআপ উৎসাসিহ করতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বিদেশি বিনিয়োগ আর্কষণে দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ঘন ঘন নীতির পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করে। তিনি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে লজিস্টিকস সেবাসহ অন্যান্য পরিসেবা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ব্যবসায় পরিবেশের উন্নয়নে কর-রাজস্ব ব্যবস্থপনায় পুরোপুরি অটোমেশন চালুর আহবান জানান তিনি।
investor bangladesh bd dse cse
source: https://www.dainikbangla.com.bd/national/46106