শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নানা অনিয়মের দায়ে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ ও ইস্যু ম্যানেজার শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টকে প্রায় ৪ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। যা ছিল কমিশন ও কোম্পানির যৌথ পরিকল্পনায় আইওয়াশ মাত্র।
অভিযোগ রয়েছে, এই জরিমানা ছিল কোম্পানি দুটির পাপমুক্তির পূর্বপরিকল্পনা মাত্র। এরপর বিশেষ ব্যবস্থায় কোম্পানিটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
অধ্যাপক শিবলী নেতৃত্বাধীন কমিশনের শুরুতে অসংখ্য কোম্পানির আইপিও আবেদন বাতিল করা হয়। কোন একটি কোম্পানিকে ভুল বা অনিয়মের দায়ে শাস্তি দিয়ে আইপিও দেওয়া হয়নি। সেই কমিশন একটি দূর্বল কোম্পানিকে আর্থিক জরিমানা করে আইপিওটি চলমান রেখেছে। যা নিয়ে শেয়ারবাজারে চলছে নানা রকম রসালো আলোচনা-সমালোচনা।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ এর ২সিসি এর অধীনে ১১ নং শর্তে বলা হয়েছে, আইপিও আবেদনে যেকোন ধরনের মিথ্যা তথ্য প্রদান আইপিও বাতিল হওয়ার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে। এছাড়া আবেদনের ২৫ শতাংশ অর্থ বা শেয়ার ক্ষতিপূরন দেবে। যা বিএসইসির হিসাবে জমা করা হবে। এছাড়াও আইন দ্ধারা অন্যান্য শাস্তি প্রদান করা হতে পারে।
এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের নানা অনিয়ম ও মিথ্যা তথ্যের কারণে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ এর ২সিসি এর অধীনে ১১ নং শর্ত অনুযায়ি আইপিও বাতিল ও শাস্তিযোগ্য ছিল। কমিশন যেসব অনিয়মের কারণে আগে কিছু কোম্পানির আইপিও আবেদন বাতিলও করেছে। কিন্তু এশিয়াটিকের ক্ষেত্রে ভিন্ন রূপ দেখাল। এর নেপথ্যে অনুঘটকের ভূমিকায় ছিলেন কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির আহমেদ। কারণ তিনি যেভাবেই হোক কোম্পানিটিকে আইপিওতে টিকিয়ে রাখতে রাজি ছিলেন।
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, আর্থিক সংকটে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ আইপিও মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে সংগৃহিতব্য ফান্ডের দিকেই তাকিয়ে আছে। যা দিয়ে কোম্পানিটিকে কোনভাবে দাঁড় করানো এবং কর্মীদের বেতনাদি দেওয়া হবে। এরইমধ্যে আটকা পড়ে গেছে কর্মীদের বেতন।
কোম্পানিটির বিরুদ্ধে জমির জাল দলিল, মিথ্যা আর্থিক প্রতিবেদন এবং শেয়ারের অর্থ জমার দেওয়ার মিথ্যা বিবৃতির প্রমাণ পায় বিএসইসি। যার কারণে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের প্রত্যেক পরিচালককে ৫০ লাখ টাকা করে জরিমানা করে বিএসইসি। এছাড়া কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার শাহজালাল ইক্যুইটিকে ৫০ লাখ টাকা, কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ও কোম্পানি সচিবকে ২৫ লাখ টাকা এবং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে আরও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করে। এক্ষেত্রে মোট ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা করে।
শেয়ারনিউজ, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩
Asiatec IPO eyewash fraud