Home Banking এক যুগ পর সিকদার পরিবারের কর্তৃত্বের বাইরে ন্যাশনাল ব্যাংক

এক যুগ পর সিকদার পরিবারের কর্তৃত্বের বাইরে ন্যাশনাল ব্যাংক

by fstcap

এক যুগের বেশি সময় ধরে সিকদার পরিবারের একচ্ছত্র কর্তৃত্বে পরিচালিত হয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড। প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের হাত ধরে সৃষ্টি হওয়া সে কর্তৃত্বের অবসান হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল বেসরকারি এ ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকটির জন্য সাত সদস্যের নতুন পর্ষদ গঠন করে দেয়া হয়েছে।

পর্ষদ ভেঙে দেয়ায় প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ হারিয়েছেন। একই সঙ্গে পরিচালক পদ হারিয়েছেন জয়নুল হক সিকদারের ছেলে রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদার। ওই পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে কেবল পারভীন হক সিকদার ব্যাংকটির নতুন পর্ষদে স্থান পেয়েছেন। তিনি জয়নুল হক সিকদারের কন্যা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ঋণ অনুমোদন, পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতার অপব্যবহার, পরিচালক নির্বাচনে জটিলতা সৃষ্টি, আমানতকারীদের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকায় ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হলো। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

পর্ষদ বাতিল ঘোষণার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে ব্যাংকটির নতুন পর্ষদের সাত পরিচালকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন পরিচালক নেয়া হয়েছে উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে। বাকি তিনজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেয়া নতুন চার পরিচালক হলেন পারভীন হক সিকদার, খলিলুর রহমান, মোয়াজ্জেম হোসেন ও সিকদার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পক্ষে প্রতিনিধি মো. সফিকুর রহমান। আর স্বতন্ত্র তিন পরিচালক হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম কামাল হোসেন। এর মধ্যে সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারকে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি মেঘনা ব্যাংক পিএলসির স্বতন্ত্র পরিচালক পদে রয়েছেন। ওই পদ থেকে পদত্যাগের শর্তে তাকে এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠি পাওয়ার পর ন্যাশনাল ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে বিলুপ্ত পর্ষদের পরিচালকদের নাম ও ছবি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানে নতুন পর্ষদের চেয়ারম্যানসহ অন্য পরিচালকদের ছবি ও নাম সংযুক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে নিযুক্তির সংবাদটি আমি নিজেও জানতাম না। বিকালের দিকে সংবাদটি শুনেছি। আমানতকারীরা যে কোনো ব্যাংকের মালিক। তাদের স্বার্থ রক্ষা করাই পরিচালনা পর্ষদের প্রধান দায়িত্ব। ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। আমি ব্যাংকটির আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করব। পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের ঝগড়া-বিবাদ থামিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যাংকটি পরিচালনার উদ্যোগ নেব। এক্ষেত্রে সব পক্ষের সহযোগিতা লাগবে।’

দেশের প্রথম প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে এক সময় সুখ্যাতি ছিল ন্যাশনাল ব্যাংকের। উদ্যোক্তা তৈরিতে ব্যাংকটির ভূমিকাও ছিল প্রশংসনীয়। ব্যাংকটির বিস্তৃত ট্রেজারি ব্যবস্থাপনার সুবিধাভোগীর তালিকায় ছিল সরকারও। দক্ষ ব্যাংকার তৈরিতেও অগ্রণী ভূমিকায় ছিল ব্যাংকটি। কিন্তু গত এক যুগে ব্যাংকটি কেবল দুর্নামই কুড়িয়েছে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক আগেই ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেটি করেনি। এখন এমন এক সময় এসে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভাঙল, যখন ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতিতে ব্যাংকটি চরমভাবে বিপর্যস্ত। বিপুল লোকসান, উচ্চ খেলাপি ঋণ, মূলধন ঘাটতি, সঞ্চিতি ঘাটতিসহ নানা সংকটে ব্যাংকটি দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ঠেকেছে। তবে নতুন পর্ষদের দায়িত্বশীল ভূমিকার পাশাপাশি যোগ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পেলে ব্যাংকটি অচিরেই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

ন্যাশনাল ব্যাংকে সিকদার পরিবারের পূর্ণ কর্তৃত্বের শুরু ২০০৯ সালে। ওই সময় ব্যাংকটির কর্তৃত্ব সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদারের হাতে চলে যায়। স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, আত্মীয়-স্বজন ও মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিকে ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদে যুক্ত করেন তিনি। ব্যাংক কোম্পানি আইনে একই পরিবারের সর্বোচ্চ চারজন সদস্য পর্ষদে থাকার বিধান থাকলেও সিকদার পরিবারের পাঁচ সদস্য ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদে। গত এক যুগে ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা অন্য উদ্যোক্তারা তেমন কোনো ভূমিকাই রাখতে পারেননি। বেশির ভাগ উদ্যোক্তা পরিচালক ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ থেকেও ছিটকে পড়েন।

২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের ১১ সদস্যের পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন জয়নুল হক সিকদার। ওইদিন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এরপর ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হন তার স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার। মূলত এ দম্পতির সন্তানদের বিরোধের কারণেই মনোয়ারা সিকদার ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তবে মনোয়ারা সিকদার চেয়ারম্যান হলেও ব্যাংক পরিচালনায় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদারের হাতে। এ নিয়ে ভাইদের সঙ্গে বিরোধে জড়ান পারভীন হক সিকদার।

ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, পারভীন হক সিকদার ব্যাংকটিকে দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন। এজন্য তিনি পর্ষদে ভাইদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারভীন হক সিকদারকেই পর্ষদ থেকে বাদ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। ভাইদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন তিনি। একই সঙ্গে বিএসইসিতে ব্যাংকটির ৪০তম (২০২২ সাল) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) মুলতবি করার আবেদন জানান। পারভীন হক সিকদার সরকারের শীর্ষ পর্যায়েও বিষয়টি জানিয়েছিলেন। এ পরিপ্রেক্ষিতেই সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয়ার নির্দেশনা আসে।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার স্বাক্ষরিত ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ বাতিলের আদেশে বলা হয়, ‘ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক ঋণ-নিয়মাচার ও বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ঋণ অনুমোদন প্রদান করা, পর্ষদ কর্তৃক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ করা, পর্ষদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংকের শেয়ার একই পরিবারে কেন্দ্রীভূত করা, পরিচালক নির্বাচন বা পুনর্নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি, পর্ষদের গোচরে পরিচালকরা কর্তৃক আর্থিক অনিয়ম সংঘটন, পর্ষদের নীতিনির্ধারণী দুর্বলতার কারণে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার অবনতি, ব্যাংকিং সুশাসন ও শৃঙ্খলা বিঘ্ন করার মাধ্যমে ব্যাংক-কোম্পানি ও আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে পর্ষদ কর্তৃক সম্পৃক্ত থাকার ঘটনা ঘটেছে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের এসব কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৭ (১) এবং ৪৮ (১-খ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও জনস্বার্থে ন্যাশনাল ব্যাংকের বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হলো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সরকার দেশের আর্থিক খাতের সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। সেটিরই প্রতিফলন হচ্ছে এ পদক্ষেপ। ব্যাংকটি নানাবিধ সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। সামনের দিনগুলোয় আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সমস্যা সমাধানে আমাদের এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।’

জয়নুল হক সিকদারের মৃত্যুর পর ন্যাশনাল ব্যাংকের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে কিছুটা কঠোর হয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এতেই ব্যাংকটির নড়বড়ে আর্থিক পরিস্থিতি সামনে আসতে শুরু করে। গত দুই বছরে ব্যাংকটির সম্পদ প্রায় ১৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। সুদ খাতের আয়কে যেকোনো ব্যাংকের মুনাফার প্রধান উৎস বিবেচনা করা হয়। ন্যাশনাল ব্যাংকের ক্ষেত্রে আয়ের প্রধান এ উৎস এখন বেশ নাজুক। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ব্যাংকটি সুদ খাতে ৯১৯ কোটি টাকা লোকসান গুনেছে। ২০২২ সালেও সুদ খাতে ৯৮৯ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছিল ব্যাংকটি। গত বছর ন্যাশনাল ব্যাংকের নিট লোকসান দাঁড়ায় ৩ হাজার ২৬১ কোটি টাকায়। আর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির পরিচালন লোকসানই ১ হাজার ১১৯ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর), ঋণ-আমানত অনুপাত (এডি রেশিও), মূলধন, সঞ্চিতিসহ কোনো শর্তই পূরণ করতে পারছে না ব্যাংকটি। 

ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৬০ শতাংশ থেকে বর্তমানে কোনো আয় নেই। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ন্যাশনাল ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের স্থিতি ছিল ৪২ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে অন্তত ২৫ হাজার কোটি টাকা আদায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা উঠেছে খেলাপির খাতায়। মামলায় আটকা পড়েছে ৭ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা। বাকি টাকা এখনো খেলাপি না হলেও মেয়াদোত্তীর্ণ। আদায় অযোগ্য হওয়ায় অবলোপন করা হয়েছে আরো ১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকার ঋণ। 

গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগৃহীত আমানতের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নির্ধারিত হারে ব্যাংকগুলোকে সিআরআর ও এসএলআর সংরক্ষণ করতে হয়। যদিও অনেক দিন থেকেই নির্ধারিত এসএলআর সংরক্ষণ করতে পারছে না ন্যাশনাল ব্যাংক। গত বছর শেষে ব্যাংকটির এসএলআর ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এসে ব্যাংকটির প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতির পরিমাণ রেকর্ড ১৩ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। ন্যাশনাল ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণও ২ হাজার ২৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। 

ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের অর্ধেকের বেশি বড় কিছু গ্রাহকের কাছে কেন্দ্রীভূত। এর মধ্যে মাত্র ২৮টি শিল্প গ্রুপের কাছে থাকা ঋণের পরিমাণ ২৩ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকার বেশি। যেখানে নির্দিষ্ট কিছু গ্রাহকের একাধিক বেনামি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। ব্যাংকটির একাধিক কর্মকর্তা জানান, ‘বড় গ্রাহকদের দুই-একজন ছাড়া কেউই টাকা ফেরত দিচ্ছে না। জামানত ছাড়াই বেশির ভাগ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব ঋণ যে আদায় হবে, সে সম্ভাবনাও ক্ষীণ।’

২০২১ সালের শেষের দিকে ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব নেন মো. মেহমুদ হোসেন। আগামী ৩১ ডিসেম্বর এমডি হিসেবে তার মেয়াদ শেষ হবে। ব্যাংকটির বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ন্যাশনাল ব্যাংকের মন্দ দিকগুলো কার্পেটের নিচে চাপা পড়া ছিল। দায়িত্ব পালনকালে আমি সেগুলো টেনে বের করেছি। এ কারণে ব্যাংকটির বিভিন্ন সূচক খারাপ দেখাচ্ছে।’

মেহমুদ হোসেন বলেন, ‘ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয়েছে। এখন পুনর্গঠিত পর্ষদ যদি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে পারে, তাহলে ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে খুব বেশি সময় নেবে না। তবে এক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই যোগ্য, দক্ষ ও পরিচ্ছন্ন হতে হবে।’

source: https://bonikbarta.net/home/news_description/365768/এক-যুগ-পর-সিকদার-পরিবারের-কর্তৃত্বের-বাইরে-ন্যাশনাল-ব্যাংক

 

national bank sikder area bsec

You may also like