পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা পাট খাতের কোম্পানি জুট স্পিনার্স লিমিটেড ধারাবাহিকভাবে লোকসান গুনছে। এক দশক ধরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি জুট স্পিনার্স। এছাড়া কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের তুলনায় ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিসএই) প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র দেখা যায়।
আজ সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ডিএসই’র তথ্য বলছে, এদিন কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয় ২৬৮ টাকায়। এরপর ২১ টাকা বা ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেড়ে ২৮৯ টাকায় লেনদেন শেষ হয়েছে।
তথ্য মতে, ২০২৩ সালের জুনে সমাপ্ত বছরে জুট স্পিনার্স শেয়ার প্রতি লোকসান দিয়েছে ৮৩ টাকা ৭৮ পয়সা। এর আগের বছরে প্রতি শেয়ারে লোকসান দিয়েছিলো ৪৪ টাকা ৮৪ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান বেড়েছে ৩৮ টাক ৯৪ পয়সা।
জুট স্পিনার্সের লোকসান দেওয়া চলতি হিসাব বছরেও অব্যাহত রয়েছে। হিসাববছরের প্রথম দুই প্রান্তিক মিলিয়ে তথা ৬ মাসে (জুলাই,২৩-ডিসেম্বর,২৩) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১১ টাকা ৬৯ পয়সা। তবে এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় লোকসান সামান্য কমেছে। ২০২২ সালের একই সময়ে লোকসান ছিলো ২৫ টাকা ২১ পয়সা।
জানা যায়, দেশের পুঁজিবাজারে ১৯৮৪ সালে তালিকাভুক্ত হয় জুট স্পিনার্স। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। বর্তমানে জেড ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে কোম্পানিটি।
ডিএসই’র তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটির ঋণ ছিলো ৪০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদী ঋণ ৩১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আর দীর্ঘমেয়াদী ঋণের পরিমাণ ৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
ঋণে জর্জরিত লোকসানি এই প্রতিষ্ঠানটি এক দশক ধরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। এছাড়া কোম্পানিটি অর্ধযুগ ধরে করতে পারেনি বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)।
তথ্য বলছে, কোম্পানিটির ১৭ লাখ শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ২৩ দশমিক ২০ শতাংশ। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৩৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ শেয়ার।
জানা যায়, পাট খাতের জুট স্পিনার্স লিমিটেড লোকসানে পড়ার অন্যতম কারণ মালিকানায় দ্বন্দ্ব। এছাড়া প্রায় আট বছর ধরে কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে পড়েছে কোম্পানিটি।
ডিএসইর তথ্য মতে, জুট স্পিনার্স লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ শামস-উল হকের মৃত্যু হয় ২০১০ সালে। এরপর থেকে তার ছেলেরা কারখানাসহ সম্পদের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বে জাড়িয়ে পড়েন। শামস-উল হকের মৃত্যুর প্রথম দুই বছর অর্থাৎ ২০১২ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলে। এরপর থেকে ব্যাংকের ঋণ বৃদ্ধির পাশাপাশি শ্রমিক জটিলতায় লোকসানে নিমজ্জিত হয় কোম্পানিটি। একপর্যায়ে চালাতে না পেরে ২০১৬ সালের জুন মাস থেকে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ কোম্পানিটির উৎপাদন কার্যক্রম এখনো বন্ধ রয়েছে।
source: arthosuchok.com
jute spinners profit loss ipo