দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সদ্যবিদায়ী ২০২৩ সালে হতাশাজনক রিটার্ন এসেছে। এ সময় পুঁজিবাজারে ১৩টি বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারে সম্মিলিতভাবে দশমিক ২ শতাংশ রিটার্ন এসেছে এবং অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইজে আটকে ছিল। শুধু হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের রিটার্ন এসেছে ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ। অন্যদিকে ইউনিলিভার কনজিউমার কেয়ার লিমিটেডের রিটার্ন সর্বোচ্চ কমেছে ২৯ দশমিক ১ শতাংশ। সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস লিমিটেডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্যানুসারে, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড ও বাটা সু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড ইতিবাচক রিটার্নে ছিল, কিন্তু বছর শেষে কোম্পানিগুলো কাঙ্ক্ষিত রিটার্ন অর্জনে ব্যর্থ হয়। আলোচ্য বছরে লাফার্জহোলসিম, বার্জার পেইন্টস, ম্যারিকো ও বাটা সুর রিটার্ন এসেছে যথাক্রমে ৬ দশমিক ৯, ৩, ১ দশমিক ৬ ও ১ দশমিক ৫ শতাংশ। এছাড়া গ্রামীণফোন লিমিটেড, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ লিমিটেড, লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড, আরএকে সিরামিকস (বাংলাদেশ) লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও রেকিট বেনকিজার (বাংলাদেশ) পিএলসির শূন্য রিটার্ন এসেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছর শেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ২০৭ পয়েন্টে। এ বছরের শেষ কার্যদিবসে সূচকটি দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৪৭ পয়েন্টে। এক বছরে সূচকটি বেড়েছে ৪০ পয়েন্ট বা দশমিক ৬ শতাংশ। এ সময়ে বাজার মূলধন ২ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ৭ লাখ ৮০ হাজার ৮৫০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৯৬০ কোটি টাকা, এ বছর যা দাঁড়িয়েছে ৫৭৮ কোটি টাকায়। এ সময়ে লেনদেন কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২৩ সালে আগের বছরের তুলনায় শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ কমেছে ৪২ শতাংশ। আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এ বছর ১ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে এক্সচেঞ্জটির দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ২৩ শতাংশ ও শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ ৩৮ শতাংশ কমেছে।
পুঁজিবাজারে খাতভিত্তিক শেয়ারে রিটার্ন পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ারে কোনো রিটার্ন আসেনি। প্রকৌশল ও বস্ত্র খাতে ১ শতাংশ এবং ব্যাংক খাতের শেয়ারে ২ শতাংশ রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে এ সময় ওষুধ ও সিরামিক খাতে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অবশ্য বীমা ও পাট খাতের মতো স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ারে রিটার্ন ছিল দুই অংকের ঘরে।
গত বছর পুঁজিবাজারে সূচকের ওঠানামা সীমাবদ্ধ ছিল ২০০ পয়েন্টে এবং আগের বছরের তুলনায় দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারদরের নিম্নসীমা) আরোপের কারণে বাজারে থাকা শেয়ারের বড় একটি অংশই লেনদেন হয়নি এবং এতে বাজারের তারল্যপ্রবাহ কমে গেছে। ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধন ছিল মোট বাজার মূলধনের (ডেবট সিকিউরিটিজ বাদে) প্রায় ৬০ শতাংশ।
source: bonikbarta.net
Investors did not get returns shares of most multinational companies