July 24, 2024 1:49 pm
Home Finance অস্ট্রেলিয়ার ওষুধের বাজারে পা রাখছে রেনাটা

অস্ট্রেলিয়ার ওষুধের বাজারে পা রাখছে রেনাটা

by fstcap

গ্লোবাল মার্কেট স্ট্র্যাটেজির অংশ হিসেবে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক রেনাটা লিমিটেড গত সপ্তাহে কন্ট্রাসেপটিভ পিল রপ্তানির জন্য অস্ট্রেলিয়ার নোভা ফার্মাসিউটিক্যালসের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করেছে।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের অন্যতম, রেনাটা লিমিটেড প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ান ওষুধের বাজারে পা রাখতে চলেছে।

গ্লোবাল মার্কেট স্ট্র্যাটেজির অংশ হিসেবে এই ওষুধ প্রস্তুতকারক গত সপ্তাহে কন্ট্রাসেপটিভ পিল (গর্ভনিরোধক বড়ি) রপ্তানির জন্য অস্ট্রেলিয়ার নোভা ফার্মাসিউটিক্যালস অস্ট্রালেসিয়া পিটিআই লিমিটেডের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করেছে।

রেনাটা ইতিমধ্যে জানিয়েছে, তারা অস্ট্রেলিয়ার থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছে; এটি অস্ট্রেলিয়ার সরকারী কর্তৃপক্ষ যা ফার্মাসিউটিক্যালস বিভিন্ন পণ্যের মূল্যায়ন এবং নিরীক্ষণের জন্য দায়ী।

 

এটি অস্ট্রেলিয়ার বাজারে নভেলা-১ নামে বিক্রিত লেভোনরজেস্ট্রেল ১.৫ মিলিগ্রাম পণ্য সরবরাহের অনুমোদন দেয়। গর্ভনিরোধক পিলটি অস্ট্রেলিয়ায় নোভা ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে, শীঘ্রই রপ্তানি শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কোম্পানি সচিব মোঃ জুবায়ের আলমের মতে, অস্ট্রেলিয়ার বাজারে নভেলা-১ এর প্রবর্তন প্রতিষ্ঠানটির বৈশ্বিক প্রসারের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে।

২০০৩ সালে সিডনিতে প্রতিষ্ঠিত নোভা ফার্মাসিউটিক্যালস একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন এবং উদ্ভাবনী কোম্পানি।

এর ওয়েবসাইট বলছে, গত ১৮ বছরে দেশটির ফার্মেসি এবং সুপারমার্কেটগুলোতে ওষুধজাত পণ্য সরবরাহে অন্যতম শীর্ষে রয়েছে তারা।

মোঃ জুবায়ের আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “নোভার অভিজ্ঞতা এবং পসারে আমরা নিশ্চিত যে  নভেলা-১ বিপুল পরিমাণে এবং বৈচিত্র্যময় শ্রোতাদের কাছে পৌঁছাবে।”

জুবায়ের আলম আরও জানান, “বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার বাজারে আমরা সাতটি মলিকিউল নিয়ে কাজ করছি। ইতিমধ্যে তিনটির জন্য আবেদন করেছি এবং একটির অনুমোদন পেয়েছি।”

“সবগুলো মলিকিউলের নিবন্ধন হয়ে গেলে আগামী বছর আমরা অস্ট্রেলিয়ার বাজারে ৪-৫ মিলিয়ন ডলার বা তারও বেশি ব্যবসার সুযোগ দেখতে পাচ্ছি।”

রেনাটার বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, রেনাটা বর্তমানে ৪৭টি দেশে তার পণ্য রপ্তানি করছে, আরও দুটি দেশে রপ্তানির কথা প্রক্রিয়াধীন। অথচ এক বছর আগেও রেনাটা ২৫টি দেশে পণ্য রপ্তানি করছিল।  

১৯৭২ সালে ফাইজার ল্যাবরেটরিজ (বাংলাদেশ) হিসাবে প্রতিষ্ঠার পর রেনাটা লিমিটেড দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় বাজারেই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে।

রেনাটা বিভিন্ন ধরণের ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য তৈরি করে, যার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, পেইন কিলার, ভিটামিন, নিউরোলজিক্যাল পণ্য, অ্যান্টি-ডায়াবেটিকস এবং অ্যান্টি-ক্যান্সার পণ্য প্রমুখ।

২০২২-২৩ অর্থবছরে রেনাটার রাজস্ব দাঁড়িয়েছে ৩,২৯৭ কোটি টাকায়, যা আগের বছরের ৩,১০৭ কোটির চেয়ে ৬.১২% বেশি।

কোম্পানির ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর অর্ধেক পণ্যই রপ্তানি হয় ডেনমার্ক, মিয়ানমার, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যে। এর সাথে অতিরিক্ত ১১.৭% চালান যায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে।

গত অর্থবছরের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের রপ্তানি ৭% হ্রাস পেয়ে ১৮৮.৭৮ মিলিয়ন ডলার থেকে ১৭৫.৪২ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অথচ রেনাটা ঠিকই তার প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে; মার্কিন ডলারের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির রপ্তানি উল্লেখযোগ্য ৩৪.৫% বৃদ্ধি পেয়েছে।

ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের রপ্তানি খাতে এর অংশও তাই আগের অর্থবছরের চেয়ে বেড়ে ১০.৭৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে; ২০২১-২২ অর্থবছরে এটি ছিল ৭.৪৫%। তবে কোম্পানির কৌশলগত ব্যবসায়িক পরিকল্পনার স্বার্থে এর কর্মকর্তারা রপ্তানির নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রকাশ করেননি।

২০২৩ সালে ৭ শতাংশ মার্কেট শেয়ার নিয়ে রেনাটা বাংলাদেশের শীর্ষ পাঁচটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির মধ্যে অবস্থান করছে।

৬৭১টি ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের মধ্যে, রেনাটার ২০টি পণ্য ধারাবাহিকভাবে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য বিক্রয়ে ৭২% অবদান রেখে চলেছে। এর বাইরে, অসংক্রামক রোগ নিরাময়ে নতুন নতুন পণ্য প্রবর্তন কোম্পানির সামগ্রিক বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

পশুস্বাস্থ্য খাতেও ১১.৪% প্রবৃদ্ধি নিয়ে রেনাটা শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে।

তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কোম্পানিটির নীট মুনাফা হ্রাস পেয়েছে  ৫৪.৬%, টাকার অংকে যা ২৩২ কোটি।

মুনাফা হ্রাসের জন্য বিভিন্ন বাহ্যিক ফ্যাক্টরকে দায়ী করা যেতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি এবং ইউটিলিটি খরচ বৃদ্ধি।

গত মাসে অনুকূল ব্যবসায়িক সম্ভাবনার প্রত্যাশায় রেনাটা ডায়াগনস্টিক খাতে প্রবেশের একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অত্যাধুনিক ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি স্থাপনের জন্য রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন রোডে প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে লোকেশনও চিহ্নিত করেছে।

রেনাটার প্রাথমিক লক্ষ্য হিউম্যান ফার্মাসিউটিক্যালস এবং অ্যানিম্যাল হেলথ প্রডাক্টসকে কেন্দ্র করে ছিল। 

তবে ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিটি ডায়াগনস্টিক খাতে প্রবেশ করে তাদের পরিসরকে আরও বিস্তৃত করেছে।

রেনাটার কর্মকর্তারা বলেন,  এই প্রসার কোম্পানির অগ্রসরমূলক চিন্তার বহিঃপ্রকাশ। 

source: tbsnews.net

 

renata pharmaceuticals financials Australia PTI limited 

You may also like