বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের কেনিয়াস্থ সাবসিডিয়ারি প্রথমবারের মতো পরিচালন মুনাফা অর্জন করে বিদেশে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্থাপন করেছে। এই সাফল্যটি প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশী এই ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি পূর্ব আফ্রিকায়, যা কিনা এই মহাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল ফার্মাসিউটিক্যাল বাজারগুলোর মধ্যে অন্যতম, সেখানে তার উৎপাদন ও বাজার বিস্তার বাড়িয়ে চলেছে।
৩০ জুন, ২০২৫ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুসারে, কেনিয়ায় স্কয়ার ইউনিটর ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা পরিচালন মুনাফা এবং ১০ কোটি ২১ লাখ টাকা নীট মুনাফা হয়েছে। এটি ছিল মূলত মূল কার্যক্রমে চালিত প্রথম স্থায়ী মুনাফা। উল্লেখ্য, এর আগের অর্থবছর ২০২৩-এ সাবসিডিয়ারিটির সামান্য মুনাফা প্রধানত বিনিময় হারের ওঠানামার কারণে হয়েছিল, যখন এটির পরিচালন কার্যক্রমে বড় ধরনের লোকসান ছিল।
এই ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে রাজস্ব বৃদ্ধি প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। স্থানীয় মুদ্রায় বছরে ১৭২ শতাংশ বৃদ্ধির প্রতিফলন ঘটিয়ে রাজস্ব আগের অর্থবছর ২৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ৭৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকাতে পৌঁছেছে, কারণ কোম্পানিটি কেনিয়ার বাজারে দ্রুত আকর্ষণ লাভ করেছে। কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নত বাজার দখল, উচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার এবং কঠোর ব্যয় নিয়ন্ত্রণের ফলে মোট মার্জিন ইতিবাচক হয়, যা প্ল্যান্টটিকে অপারেশনাল ব্রেকাভেন পয়েন্ট অতিক্রম করতে সহায়তা করে।
অডিট রিপোর্টে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস জানিয়েছে, বোর্ড এই প্রথমবার কর-পরবর্তী নীট মুনাফা অর্জনের খবরে ‘সন্তুষ্ট’ এবং এই অর্জনকে “কোম্পানির বাস্তবায়ন কৌশলটির এক বৈধতা” হিসেবে বর্ণনা করেছে। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেছে যে, কার্যক্রম শুরুর মাত্র দেড় বছরের মধ্যে মুনাফায় পৌঁছানো উৎপাদন ব্যবস্থার দক্ষতা এবং অঞ্চলে তাদের পণ্যের চাহিদার শক্তিমত্তাকে তুলে ধরে।
আলোচ্য ২০২৫ অর্থবছর কেনিয়ার সাবসিডিয়ারিটির জন্য আরেকটি মাইলফলক চিহ্নিত করেছে, কারণ এই সময়েই কেনিয়া প্ল্যান্ট থেকে প্রথম রপ্তানি চালান রেকর্ড করা হয়। প্রাথমিক রপ্তানির মূল্য প্রায় ৫৫ লাখ টাকা মতো সামান্য হলেও, কোম্পানি জানিয়েছে যে এটি একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক রপ্তানি চালনার সূচনা এবং ইউনিটটিকে পূর্ব আফ্রিকান কমিউনিটির (ইএসি) মধ্যে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের সুবিধা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত করছে।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস কেনিয়া ইপিজেড লিমিটেড ২০১৭ সালের জুনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এবং এটি মাচাকোস কাউন্টির আথি রিভার ইপিজেড-এ একটি অত্যাধুনিক উৎপাদন সুবিধা পরিচালনা করে। প্ল্যান্টটি ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে এবং সেই বছরের মার্চ মাস থেকে বাজারে পণ্য সরবরাহ শুরু করে। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি এই সাবসিডিয়ারিটির ১০০ শতাংশ মালিকানা ধারণ করে। কেনিয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল বাজারের মূল্য ২০২৪ সালে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার ছিল এবং স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় উৎপাদনকে নীতিগত সমর্থনের কারণে ২০৩১ সালের মধ্যে এটি ১.৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
https://sharenews24.com/article/112913/index.html
squrpharma square
