Home Stock Market টোটালগ্যাসকে কিনে নিচ্ছে এমজেএলের সাবসিডিয়ারি ওমেরা পেট্রোলিয়াম

টোটালগ্যাসকে কিনে নিচ্ছে এমজেএলের সাবসিডিয়ারি ওমেরা পেট্রোলিয়াম

by fstcap

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমজেএল বাংলাদেশ পিএলসি’র সহযোগী প্রতিষ্ঠান ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড ফরাসি কোম্পানি টোটালগ্যাসের বাংলাদেশের ব্যবসা অধিগ্রহণ করছে। যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি প্রিমিয়ার এলপি গ্যাস লিমিটেড দেশে টোটালগ্যাসের ব্যানারে ব্যবসা পরিচালনা করতো। ওমেরা পেট্রোলিয়াম সম্প্রতি প্রিমিয়ার এলপি গ্যাসের প্রায় শতভাগ শেয়ার কিনে নেওয়ার ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুসারে, ৩২ মিলিয়ন ডলারে প্রিমিয়ার এলপি গ্যাসের ৯৯.৯৮ শতাংশ শেয়ার কিনবে ওমেরা পেট্রোলিয়াম, স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৩৯০ কোটি টাকা।
৩২ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১৯ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে প্রিমিয়ার এলপি গ্যাস লিমিটেডের শেয়ার কেনায়, যার আওতায় থাকবে কোম্পানিটির সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ। অন্যদিকে কোম্পানিটির ব্যাংক ঋণসহ অন্যান্য দায় নিজের কাঁধে তুলে নেবে ওমেরা পেট্রোলিয়াম, যা শোধ করতে ব্যয় হবে ১৩ মিলিয়ন ডলার।
বর্তমানে ওমেরা পেট্রোলিয়াম এলপি গ্যাসের বাজারে বড় প্লেয়ার। টোটালগ্যাস তথা প্রিমিয়ার এলপি গ্যাস লিমিটেডকে অধিগ্রহণ করার পর কোম্পানিটির মার্কেট শেয়ার বেড়ে ২২ শতাংশ থেকে ২৭ শতাংশে উন্নীত হবে।

বর্তমানে ২৬টি কোম্পানি দেশের এলপি গ্যাসের বাজারে সক্রিয় রয়েছে। প্রধান প্লেয়ারগুলোর মধ্যে আছে বসুন্ধরা এলপিজি, যমুনা এলপিজি, মেঘনা গ্রুপের ফেশ এলপিজি। গত সরকারের আমলে প্রায় ৬০টি কোম্পানিকে এলপি গ্যাসের ব্যবসার লাইসেন্স দেওয়া হয়। এর অর্ধেকেরও বেশি এখন পর্যন্ত উৎপাদনে আসতে পারেনি। আবার যেসব কোম্পানি উৎপাদন কার্যক্রম চালাচ্ছে সেগুলোর একটি বড় অংশ নানা কারণে লোকসান গুনছে। এমনই একটি লোকসানী কোম্পানি হচ্ছে প্রিমিয়ার এলপি গ্যাস লিমিটেড (টোটালগ্যাস)।
গত কয়েক বছর ধরে টোটাল গ্যাস তথা প্রিমিয়ার এলপি গ্যাস টানা লোকসান দিয়ে যাচ্ছে। বার্ষিক লোকসানের পরিমাণ ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকা। এমন অবস্থায় কোম্পানির মালিকরা ব্যবসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। এর অংশ হিসেবে গত কয়েকমাস ধরে ওমেরা পেট্রোলিয়ামের কাছে কোম্পানির ব্যবসা বিক্রি করার বিষয়ে আলোচনা চলছিল। সম্প্রতি আলোচনায় চূড়ান্ত মতৈক্য হলে কোম্পানি দুটি এ বিষয়ে একটি চুক্তি করে। প্রিমিয়ার এলপি গ্যাস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুর মোরশেদ সিদ্দিকী ও ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিম চৌধুরী নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। ওমেরা পেট্রোলিয়ামের পরিচালক আজম জে চৌধুরীসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড হচ্ছে এমজেএল বাংলাদেশ পিএলসির’র একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ওমেরার ৬২ শেয়ারের মালিক এমজেএল নেদারল্যান্ডসভিত্তিক উন্নয়ন ব্যাংক- এফএমও’র ধারণ করা ১৩ শতাংশ শেয়ারের পুরোটা কিনে নিয়েছে। অন্য অংশীদার বিবি এনার্জি (এশিয়া) প্রাইভেট লিমিটেডের কাছে রয়েছে ওমেরার ২৫ শতাংশ শেয়ার।

২০০২ সালে টোটালগ্যাস বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের শীর্ষ তিনটি এলপিজি আমদানিকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্থান করে নেয়। তবে বেশিদিন এ অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি কোম্পানিটি। স্থানীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ক্রমেই পিছিয়ে পড়তে থাকে।
বাংলাদেশে টোটালগ্যাজের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে এলপিজি আমদানি, সংরক্ষণ, বোতলজাতকরণ এবং ১২ কেজি, ১৫ কেজি ও ৩৩ কেজি সিলিন্ডারে বাজারজাতকরণ। শিল্প খাতের জন্য তারা বাল্ক বা পাইকারি সরবরাহও করে থাকে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তাদের ১ লাখ টন ধারণক্ষমতার টার্মিনাল এবং বগুড়ায় একটি সেকেন্ডারি স্থাপনাও রয়েছে।
অন্যদিকে ২০১৫ সালে এলপি গ্যাসের বাজারে পা রাখে ওমেরা পেট্রোলিয়াম। আগ্রাসী বিনিয়োগ আর কার্যকর বিপণন কৌশলের বদৌলতে এক দশকের মধ্যে দেশের শীর্ষ এলপিজি বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানে উন্নীত হয়।

২০১০ সালে দেশে এলপিজির বার্ষিক চাহিদা ছিল ৭০ হাজার টন, যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭ লাখ টনে। প্রতি বছর এই খাত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে চাহিদা ৩০ লাখ টনে পৌঁছতে পারে।

mjl

টোটালগ্যাসকে কিনে নিচ্ছে এমজেএলের সাবসিডিয়ারি ওমেরা পেট্রোলিয়াম

You may also like