চলতি ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) লিমিটেডের কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৭০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই প্রান্তিকে কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ৩৩৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয়ও কমেছে প্রায় ৭০ শতাংশ। গতকাল কোম্পানিটির প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেক্সিমকোর আয় হয়েছে ৫৮১ কোটি ৮ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ হাজার ৯১৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে এ প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় কমেছে ৬৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৭৯ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৩ টাকা ৮৩ পয়সা। গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৯৪ টাকা ২১ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই প্রান্তিকে যা ছিল ৯৫ টাকা ৪১ পয়সা।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, রফতানি ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে যাওয়া এবং ডলার সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় লোকসান হয়েছে।
সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঘোষিত লভ্যাংশ ও অন্যান্য এজেন্ডায় বিনিয়োগকারীদের অনুমোদন নিতে ২৮ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করা হয়েছে। রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ নভেম্বর।
নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৭ টাকা ৯২ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১৪ টাকা ১ পয়সা। সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৭০৯ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। মন্থর বৈশ্বিক অর্থনীতি, ডলার সংকট, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটায় কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আয় কমেছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। এছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াকেও দায়ী করা হয়েছে। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৯৫ টাকা ১৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৯১ টাকা ১৯ পয়সা।
সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে বেক্সিমকো লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। তার আগে সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরে কোম্পানিটি ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। আলোচ্য হিসাব বছরে বছরে মুনাফা হয়েছিল ৬৬০ কোটি টাকা। ইপিএস ছিল ৭ টাকা ৫৩ পয়সা। এনএভিপিএস ছিল ৭৮ টাকা ২৮ পয়সায়। এছাড়া সমাপ্ত ২০২০ ও ২০১৯ হিসাব বছরে ৫ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটির পর্ষদ।
সার্ভিলেন্স রেটিং দীর্ঘমেয়াদে ‘ডাবল বি প্লাস’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-ফোর’। সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, চলতি ২০২৩ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকের (জুলাই-মার্চ) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও রেটিং প্রকাশের দিন পর্যন্ত অন্যান্য প্রাসঙ্গিক গুণগত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (ইসিআরএল)।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর দাঁড়িয়েছে ১১৫ টাকা ৬০ পয়সায়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ১১৫ টাকা ৬০ ও ১১৬ টাকা ৯০ পয়সা।
Source: https://bonikbarta.net/
Beximco Loss EPS DSE CSE Stockmarket