Home National রেমিট্যান্স পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি

রেমিট্যান্স পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি

by fstcap

টাকার বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রার তুলনামূলক ভালো দর পাওয়ায় রেমিট্যান্স পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অক্টোবরের পর নভেম্বর মাসেও রেমিট্যান্স বেড়েছে। যদিও নভেম্বরের শুরুর দিকের চেয়ে শেষ দিকে ধীরগতি ছিল। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর)  রেমিট্যান্স এসেছে ৮৮১ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৮৭৯ কোটি ডলার। এতে করে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২ কোটি ডলার বা শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে ১৯৩ কোটি ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে এসেছে। গত বছরের একই মাসের তুলনায় যা ৩৩ কোটি ডলার বা ২১ শতাংশ বেশি। অবশ্য আগের মাস অক্টোবরের তুলনায় কমেছে ৫ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রেমিট্যান্স কমে যায় ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। একক মাস হিসেবে গত অক্টোবরে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পরও চার মাসে কম ছিল ৩১ কোটি ডলার বা ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ডলার বেচাকেনার একটি দর ঠিক করে আসছে। তবে নির্ধারিত দরে বেচাকেনা হয় খুব কম। বর্তমানে বাফেদা-এবিবি রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ডলার কেনার দর ঠিক করেছে ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা। অন্যদিকে আমদানির বিপরীতে বিক্রির দর ১১০ টাকা ২৫ পয়সা। তবে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে এখন ১২১ থেকে ১২৩ টাকায় ডলার কিনছে ব্যাংকগুলো। আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করছে এর বেশি।

ব্যাংকগুলো কেমন দরে ডলার কিনছে তা তদারকি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেখা যাচ্ছে, ঘোষিত দর মানতে চাপাচাপি করলেই রেমিট্যান্স কমছে। গত নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে দরের বিষয়ে শিথিলতা ছিল। যে কারণে প্রথম ১০ দিনে ৭৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার তথা দৈনিক গড়ে ৭ কোটি ৯৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে গত ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় এবিবি ও বাফেদা বৈঠক করে ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দেয়, নির্ধারিত দরেই ডলার কিনতে হবে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিদর্শন শুরু করে। এতে করে গত ১১ নভেম্বর থেকে পরের ২০ দিনে এসেছে ১১৪ কোটি ডলার। দৈনিক যা ৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। এর মানে দর নিয়ে কড়াকড়ির পর দৈনিক গড়ে ২ কোটি ডলারের বেশি কমেছে।

 

ব্যাংকাররা জানান, ব্যাংকিং চ্যানেলের রেমিট্যান্সের ঘোষিত দরের সঙ্গে প্রকৃত অবস্থার কোনো মিল নেই। এর মধ্যে বাজার পরিস্থিতি ভালো দেখাতে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ থেকে দুই দফায় ৭ কোটি ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আবার  সংকটের মধ্যেই দুই দফায় ডলারে ৭৫ পয়সা দর কমানো হয়েছে। এতে করে ঘোষিত দরের সঙ্গে প্রকৃত দরের ব্যাপক পার্থক্য তৈরি হয়েছে। এসব কারণে হুন্ডি কমানোর উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত  হচ্ছে। হুন্ডিতে পাঠাতে কোনো সার্ভিস চার্জ লাগে না। হুন্ডি চক্রের সদস্যরা তাৎক্ষিণকভাবে সুবিধাভোগীর বাড়ি, ব্যাংক বা এমএফএস অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দেয়। এসব কারণে রেকর্ড সংখ্যক প্রবাসী দেশের বাইরে গেলেও রেমিট্যান্স সেভাবে বাড়ছে না। 

ঘোষিত দর না মানায় গত সেপ্টেম্বরে ১০ ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে জরিমানা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স ব্যাপক কমে ১৩৩ কোটি ডলারে নেমে আসে, গত ৪২ মাসের মধ্যে যা ছিল সর্বনিম্ন। রেমিট্যান্স কমার পেছনে ওই জরিমানা অন্যতম কারণ ছিল। তবে ডলার পরিস্থিতি চরম খারাপ হওয়ায় অক্টোবরে কড়াকড়ি থেকে সরে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

source: samakal.com

 

remittance  foreign currency

You may also like