March 26, 2025 3:26 am
March 26, 2025 3:26 am
Home Stock Market সোনালী আশের শেয়ারদর একমাসে বেড়েছে ৪২%

সোনালী আশের শেয়ারদর একমাসে বেড়েছে ৪২%

by fstcap

stockmarket sharebazar pujibazar investment Bsec dse cse

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালি আঁশের শেয়ার দর লাগামহীনভাবে বাড়ছে। গত এক মাসে মূলধনী এ কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ২১৭ টাকা যা ৪২ শতাংশ। কারসাজি করে এই দরবৃদ্ধি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোম্পানিটির অডিটেড আর্থিক রিপোর্টে মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দাঁড়িয়েছে ১৮৪ পয়েন্টে। এতে করে বিনিয়োগের জন্য কোম্পানিটি ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে কোম্পানিটির শেয়ার ধারণ করা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধ্যানের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা। এ কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ জানে না বলে জানিয়েছে সোনালি আঁশের কর্তৃপক্ষ।

গত এক মাসে সোনালি আঁশের মোট শেয়ারের মাধ্যমে বাজারমূল্যে বেড়েছে ১১৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। অন্যদিক এ সময়ে ধারণ করা বিনিয়োগকারীদের (সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক) শেয়ারের মাধ্যমে বাজারমূল্যে বেড়েছে ৫৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির ৪৯ দশমিক ২২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছে। শেয়ার দর বৃদ্ধির প্রসঙ্গে মুঠোফোনে জানতে চাইলে কোম্পানির সচিব মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, সোনালি আশের শেয়ার দর বৃদ্ধির কারণ জানি না। যেসব তথ্য ছিল ডিএসইতে জানানো হয়েছে। ডিএসইর তথ্য মতে, গতকাল সোমবার কোম্পানিটির শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৭২৩ টাকা ৫০ পয়সা। গত ১ অক্টোবর কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৬ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২১৭ টাকা ৫০ পয়সা। গতকাল কোম্পানিটির মোট শেয়ারের বাজারমূল্যে হয়েছে ৩৯২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। গত ১ অক্টোবর মোট শেয়ারের বাজারমূল্যে ছিল ২৭৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এই সময়ের ব্যবধানে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের বাজারমূল্যে যেড়েছে ১১৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মধ্যে ৪৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ ধারণ করেছে সাধারণ বিনিয়োগকারী দশমিক ৬৩ শতাংশ ধারণ করেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। সে হিসেবে তাদের (সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী) শেয়ারের বাজারমূল্যে বেড়েছে ৫৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। লাগামহীন কোম্পানিটির শেয়ার দর বৃদ্ধির কারণ জানান জন্য রেগুলেটরদের (বিএসইসি) দৃষ্টি আকর্ষণ করেন পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা।

শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ করে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, অনেকদিন ধরে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে একটি চক্র কারসাজি করে শেয়ার দর বৃদ্ধি করছে। গত এক মাসে কোম্পানিটির শেয়ার নয় বেড়েছে প্রায় ৪২ শতাংশ। এদিকে কোম্পানিটির শেয়ার নয় অসাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে কোম্পানিটিকে গত ১৭ অক্টোবর ডিএসই নোটিশ পাঠিয়েছিল। এর জবাবে কোম্পানিটি (সোনালি আঁশ) জানায়, কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ার দর বাড়ছে। সেই শেয়ার দর বৃদ্ধি এখনো থামেনি। বরং বেড়েই চলছে। সামনে আরও বাড়বে বলেও হাউসগুলোতে তথ্য চালাচালি হচ্ছে। তবে ওইসব তথ্যের কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। শেয়ার দর বৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখছে জানিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, সোনালি আশের শেয়ার দর বাড়ায় পেছনে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না। বিষয়টি দেখছে কমিশন। আরও বলেন, শেয়ারটির দর বাড়ানো ক্ষেত্রে অনিয়ম পাওয়া গেলে, কোম্পানির বা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১৫ পয়েন্ট ছাড়ালেই তা বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসেবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। এ হিসেবে ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানান বিএসইসি। সেই হিসাবে ডিএসইতে গতকাল সোনালি আঁশের আন- অডিটেড আর্থিক রিপোর্টে পিই রেশিও দাঁড়ায় ৪১১ পয়েন্ট। অভিটেড আর্থিক রিপোর্টে পিই রেশিও দাড়ায় ১৮৪ পয়েন্ট। মানে পিই রেশিও হিসাবে, বিনিয়োগ নিরাপদ অবস্থানে নেই। উল্লেখ্য, আগের অর্থবছর তুলনায় গত অর্থবছরে (২০১২-২০২৩) সোনালি আঁশের তৃতীয় প্রাপ্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) আর্থিক প্রতিবেদন হিসেবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে ৮৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। তৃতীয় প্রাপ্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩০ পয়সা। আগের অর্থবছর (২০২১-২২) একই সময়ে (জানুয়ারি-মার্চ) ইপিএস ছিল ১ টাকা ৭৮ পয়সা। তিন প্রান্তিকে (জুলাই ২০২২ মার্চ ২০২৩ ) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৩২ পয়সা। আগের অর্থবছর (২০২১-২২) একই সময়ে (জুলাই ২০২১-মার্চ ২০২২) ইপিএস ছিল ৩ টাকা ৫ পয়সা। গত ৩১ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১১৫ টাকা ৬১ পয়সা। আলোচ্য সময় কোম্পানিটির ক্যাশ ফ্লো ছিল ১২ টাকা ৫১ পয়সা। ডিএসইর সূত্রে জানা যায়, কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি ৪২ লাখ ৪০ টাকা। শেয়ার সংখ্যা ৫৪ লাখ ২৪ হাজার। রিজার্ভ রয়েছে ৫৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যজ্ঞমেয়াদি ঋণ ৫০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ৪৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

You may also like